চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অপর্যাপ্ত ত্রাণে অসন্তোষ বড়পোলে সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ এপ্রিল, ২০২০ | ৫:০০ পূর্বাহ্ণ

নগরীতে চলছে অঘোষিত লকডাউন। পুলিশের অনুমতি ছাড়া এই শহর থেকে বের হওয়া কিংবা শহরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে খাদ্যপণ্য। কিন্তু এসব খাদ্যপণ্য অপর্যাপ্ত বলে অভিযোগ উঠেছে। অসন্তোষ দানা বাঁধছে ক্রমশ।
গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর বড়পোল এলাকায় হাজারখানেক লোক ত্রাণের দাবিতে নগরীর পোর্ট কানেকটিং সড়কটি এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবরোধ করে রাখে। এতে উভয় পাশে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান আটকে থাকে। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। জানা যায়, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ও ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের ত্রাণ বিতরণের সময় সেখানে প্রচুর লোক জড়ো হয়। এক পর্যায়ে ত্রাণ না পাওয়া লোকজন গুরুত্বপূর্ণ পোর্ট কানেকটিং সড়ক অবরোধ করে।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় নি¤œবিত্তের মানুষ ত্রাণ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রায় একঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে তাদের আমরা কথা বলে সড়ক থেকে সরিয়ে দিই।
জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ নিয়ে এ ধরনের অসন্তোষ চলছে। সরকারি পর্যায়ে যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে তাও অপর্যাপ্ত বলে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেও এমন ধরনের কথার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ প্রসঙ্গে তারা বলছেন, এক অদৃশ্য অনিশ্চয়তার কারণে মানুষ মানসিক সংকটে ভুগছে। ফলে ত্রাণের ব্যাপারে একটা অনিশ্চয়তা তাদের মধ্যে কাজ করছে।
নগরীর ১৫ নম্বর বাগ মনিরাম ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, অদৃশ্য অনিশ্চয়তার কারণে মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। এই দুর্যোগ কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারছে না। তাই যারা ত্রাণ পেয়েছে তারাও অধিক ত্রাণ চায়। আবার একথাও সত্য, যত পরিবারের জন্য ত্রাণ আসা দরকার, আসছে তার চেয়ে কম। তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে ১০ হাজার পরিবারের ত্রাণ দরকার। কিন্তু আমি পাচ্ছি ৩৬৩ পরিবারের। এর আগে শুরুতে ৭২ পরিবার, পরে ৮০ পরিবার ও পরে ১৮০ পরিবারের জন্য ত্রাণ পেয়েছি। তবে এর বাইরে আমি ব্যক্তিগতভাবেও দিয়েছি ১৬০০ পরিবারকে। এভাবেই চলছে। তবে সবাই মনে করছে আজকেই তাদের ত্রাণ লাগবে। এজন্যই সমস্যাটা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম শহরে ১৬ হাজার পরিবারকে নিয়মিত ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরদের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে এই ত্রাণ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ভোটার তালিকায় তারা আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে না। তাদের নাম মোবাইল নম্বর ও ঠিকানার ভিত্তিতেই ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে।
শহরের পাশাপাশি গ্রামেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কিছু প্রান্তিক মানুষের কাছে ত্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে উপজেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া ত্রাণের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট