চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

অলিগলিতে ‘চোর-পুলিশ’ খেলা!

ইমরান বিন ছবুর

১৩ এপ্রিল, ২০২০ | ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ

  • পুলিশ আসলে সরে যাচ্ছে, চলে গেলে  আবার আড্ডা-সিএমপি কমিশনার
  • ত্রাণের আশায় লকডাউন না মেনে অনেকে সড়কে বের হচ্ছে- নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন সাধারণ মানুষকে ঘরে ঢোকাতে দিনরাত খেটে মরছে। অন্যদিকে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে ‘চোর-পুলিশ’ খেলছে। অকারণে রাস্তায় বের হওয়া লোকদের এতদিন বুঝিয়ে বাড়ি ফেরত পাঠালেও এখন থেকে কঠোর একশনে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী চোখের আড়াল হলে তারা ফের রাস্তায় জটলা পাকাচ্ছে। গত কয়েকদিনে নগরীর অলিগলিতে এদৃশ্য দেখা যায়।
জনগণকে ঘরে রাখতে গত শুক্রবার থেকে এক প্রকার ‘বাধ্য’ হয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সন্ধ্যা ৬টার পর ঘরের বাইরে অবস্থান করা নিয়ে গত ১০ এপ্রিল শুক্রবার সরকারি প্রজ্ঞাপণ জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপণ জারির পর সন্ধ্যা ৬টার পর ঘর থেকে বের হলে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন প্রশাসন। অকারণে সন্ধ্যার পর বাইরে ঘুরাফেরা করার দায়ে
নগরীর বিবিরহাট এলাকা থেকে পিতা ও পুত্রকে আটক করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। আটক দুইজনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। সন্ধ্যার পর বিবিরহাটের সোহেল স্টোর নামে একটি দোকনে ভিড় দেখলে সবাইকে যার যার বাসায় চলে যেতে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সবাই চলে গেলে আটককৃত পিতা-পুত্র না গিয়ে উল্টো কাজে বাধা দেন। এ কারণে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানান পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কাশেম ভূইয়া।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মাহাবুবর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সড়ক বা মহাসড়কে চলাচল বন্ধ হলেও অলিগলিতে এবং কখনো কখনো চায়ের দোকানে আড্ডা চলছে। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী যখন আসে, তখন তারা সরে যায় এবং পুলিশ সরে গেলে আবার আড্ডা শুরু করে। পুলিশের সাথে এক ধরনের ‘বেড়াল-ইদুর’ খেলার মত দাঁড়িয়েছে। এখন থেকে অলিগলি বা দোকানে যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আড্ডা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছি। যারা সংক্রমণ কাজে বাধা দিবে অথবা সাহায্য করবে না তাদের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার থেকে সংক্রামক আইন ও দন্ডবিধিতে মামলা রুজু করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে ৩০০ মেট্রিকটন চাল এবং ১৪ লাখের মত টাকা দিয়েছি। সিটি কর্পোরেশন তা ক্রমান্বয়ে বিতরণ করছে। অনেকে ত্রাণ পাওয়ার পর সবজির জন্য তো বাজারে যাচ্ছে। ওটা তো আটকানো যাচ্ছে না। তবে পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ সবাইকে নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি, অযথা যাতে বাইরে ঘুরাফেরা না করে। যারা নির্দেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী জানান, আমরা অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে যেটা বুঝতে পেরেছি, অনেকে ত্রাণ না পাওয়ার ফলে ত্রাণের আশার রাস্তায় ঘুরাঘুরি করছে। নি¤œবিত্ত যেখানে বসবাস করে যেমন বস্তি এলাকাগুলোতে তারা তো একেবারেই সচেতন না। তাদের কথা হচ্ছে তারা ত্রাণ পেলে ঘর থেকে বের হবে না। আমরা অনেক সময় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে মধ্যবিত্ত বা নিম্ন বিত্তদের মধ্যে যারা ত্রাণ পাইনি, তাদের তালিকা নিয়ে আসি। সম্ভব হলে জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে তাদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করি। এছাড়াও তো কিছু ছেলে কোন কারণ ছাড়াই রাস্তায় ঘুরাঘুরি করে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট