চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৫শ টাকা বেড়ে কমেছে ৫০ টাকা
৫শ টাকা বেড়ে কমেছে ৫০ টাকা

১৭ হাজার থেকে বেড়ে ৭২ হাজার পরিবার সরকারি খাদ্য সহায়তা

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৬ এপ্রিল, ২০২০ | ২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

  • করোনা সংক্রমণের পর ৬শ মে. টন চাল ও ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার
  • ‘সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে সহায়তা তালিকা বাড়ানো হবে’
  • নিম্ন-মধ্যবিত্ত কোন পরিবার সংকটে থাকলে কন্ট্রোল রুমে ফোন করার অনুরোধ জেলা প্রশাসনের

সরকারি খাদ্য সহায়তা ১৭ হাজার পরিবার থেকে বেড়ে এখন ৭২ হাজারে পৌঁছেছে। উপকারভোগী পরিবারের তালিকা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন কার্যালয়। তৃতীয় দফায় ১৬ লাখ টাকা ও আড়াই শ মে. টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে তা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের পর এ পর্যন্ত ৬শ মে. টন চাল ও ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রথম দফায় ১৭ হাজার লোককে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় তা বেড়ে ৪২ হাজারকে দেওয়া হয়েছে। দিন দিন তালিকা বাড়ছে। এখন তৃতীয় ধাপে ৭২ হাজার লোককে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার তালিকা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে বিরাজমান পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে সহায়তা তালিকা বাড়ানো হবে বলে জানান এডিসি কামাল হোসেন। খাদ্য সহায়তার বিষয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। অনেক নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকলজ্জার ভয়ে সরকারি সহায়তা নিতে অনাগ্রহ। এই ধরনের কোনো পরিবার সংকটে থাকলে কন্ট্রোল রুমে ফোন (নম্বর ০১৭০০-৭১৬৬৯১, ০৩১-৬১১৫৪৫) করার অনুরোধ করেছে জেলা প্রশাসন। এডিসি মো. কামাল হোসেন বলেন, মধ্যবিত্ত কোনো পরিবার আমাদের কাছে ফোন করলে আমরা রাতের বেলায় খাদ্য সহায়তা ঘরে পৌঁছে দেব। এই ধরনের অনেক পরিবারকে আমরা সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। সরকারি সহায়তা ছাড়াও বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। নানাভাবে করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। নগরীর সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর ছাড়াও চসিক নির্বাচনে প্রার্থীরা খাদ্য সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এতে সরকারি খাদ্য সহায়তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন সূত্র। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, সরকারি সহায়তা ১০ কেজি চাল ছাড়াও খাদ্যপণ্য কেনার জন্য নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ের সহায়তা ব্যক্তি ও সংস্থা বিশেষ ভিন্ন হচ্ছে। সমাজের দানশীল বা কেউ কেউ ১০ কেজি, কেউবা ৫ কেজি করে চাল দিচ্ছেন। বেসকরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, চালের পরিমাণ নিয়ে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সরকারি ত্রাণ প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি করে দেওয়া হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, তৃতীয় দফায় ১৬ লাখ টাকা ও আড়াই শ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য চার লাখ নগদ টাকা ও ৫০ মে. টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর জেলার ১৫ উপজেলার জন্য দুইশ মে. টন চাল ও ১২ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বরাদ্দের টাকা বিভিন্ন উপজেলায় পৌঁছে গেছে। এখন তালিকা অনুযায়ী ঘরে ঘরে পৌঁছে দিবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমীন পূর্বকোণকে বলেন, সকালে জেলা প্রশাসনের চিঠি পাওয়ার পর বিকেল থেকে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বরাদ্দ এলাকায় এলাকায় পৌঁছে গেছে। ১৪ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় প্রতি পরিবার ১০ কেজি করে চাল ও নগদ টাকা সহায়তা পাবেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘ত্রাণের কোনো ঘাটতি নেই। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবে না। মানুষ ঘরে থাকবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলবে। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবে। সরকারি সহায়তা ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে’। তিনি বলেন, পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী খাদ্য সহায়তা বাড়ানো হচ্ছে। সুশৃঙ্খলভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। এতে মানুষ উৎসাহিত হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট