চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘মানবতার’ মাঠে সরব প্রার্থীরা

চসিক নির্বাচন আপাতত মাথায় রাখতে নারাজ মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীরা

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৪ এপ্রিল, ২০২০ | ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

গত ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। করোনো সংক্রমণ আতঙ্কে স্থগিত করা হয়েছে নির্বাচন। স্থগিত হওয়ার পরই থেমে যায় নির্বাচনী ডামাডোল। তবে করোনো সতর্কতা ও সহায়তা নিয়ে মাঠে সরব রয়েছেন প্রার্থীরা।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন, কাউন্সিলর পদে ১৬৩ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এরমধ্যে মেয়র পদে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত হেভিওয়েট প্রার্থীদের নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি। ভোট বন্ধ হওয়ার পর থেকেই মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। অবশ্য বিএনপি প্রার্থী করোনো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে নির্বাচন স্থগিত করার দাবি করেছিলেন। একই দাবি করেছিলেন আরও তিন মেয়র প্রার্থী। নির্বাচন স্থগিত করার জন্য ইসিকে লিখিত চিঠি দিয়েছিলেন। নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর ভোটারের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন না প্রার্থীরা। তবে বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে মাঠে সরব রয়েছেন তারা।

বড় দুই দলের প্রার্থী ছাড়াও অন্যান্য মেয়র প্রার্থীরাও মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মাস্ক বিতরণে মাঠে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মানুষের কল্যাণের জন্যই রাজনীতি। দেশের যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিলাম। এখনো আছি।’ তিনি বলেন, ‘একমাত্র আল্লাহপাক ছাড়া করোনো থেকে মানবজাতিকে রক্ষার আর কেউ নেই। মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল, মুসল্লি ও সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ এবং জীবাণুনাশক ছিটিয়েছি। এছাড়াও অসহায়, দরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছি। ৪২ সাংগঠনিক ওয়ার্ডে খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও সমাজের বিত্তবানরাও মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছেন। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন পুরোদমে সরব রয়েছেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং খাদ্যপণ্যসামগ্রী নিয়ে জনগণের পাশে রয়েছেন। প্রার্থী নিজে ছাড়াও তার পক্ষে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছেন দলীয় নেতাকর্মীরাও।

ডা. শাহাদাত হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, ‘করোনো মহামারী আকার রূপ নেওয়ার আগে নির্বাচন বন্ধ করার দাবি করেছিলাম। নির্বাচন বন্ধ হলেও এখন সম্পূর্ণ মানবিক কারণে গরিব-অসহায়-দিনমজুর ও নি¤œআয়ের লোকজনের পাশে দাঁড়িয়েছি। নানা ধরনের সাহায্য-সহায়তা বিতরণ করছি। এছাড়া চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে আলাদা সেল গঠন করেছি।’ তিনি বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখেছি, মানুষ অভাব-অনটনে রয়েছে। এলাকায় এলাকায় ধনাঢ্য ও বিত্তবানেরা এগিয়ে আসলে অসহায় মানুষগুলো সহায় পাবে।

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী ছাড়াও মানবিক সহায়তা নিয়ে মাঠে রয়েছেন অন্য প্রার্থীরাও।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী মাওলানা এম এ মতিন বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ রেখেছি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীদের দিক নির্দেশনা দিয়েছি।’ তিনি বলেন, পবিত্র মাহে রমজান আসন্ন। রোজার মাসে অন্তত ৫০ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্তমান ত্রাণসামগ্রী বিতরণে অনেক মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না। মানুষ জড়ো করে লোক দেখানো ত্রাণ দিচ্ছে। এতে নীরবে রয়ে যাচ্ছে অনেক মানুষ। এসব মানুষের তালিকা করে ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও খাদ্যপণ্য সহায়তা নিয়ে মানবতার পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বর্তমান কাউন্সিলর ও পদপ্রার্থী ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা ও জীবাণুনাশক সামগ্রী বিতরণ করে চলেছেন। সরব রয়েছেন মাঠে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট