চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

দিনে হাজার কোটি টাকার লেনদেন বন্ধ

ক্রেতা নেই চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে

দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৩ এপ্রিল, ২০২০ | ২:৫২ পূর্বাহ্ণ

দিনে হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতা ও শ্রমিকের হাঁকডাক আর পদভারে গমগম করতো দেশের ভোগ্যপণ্যের বড় বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে। এখন ক্রেতার অভাবে খাঁ খাঁ করছে সেই ব্যস্ততম বাণিজ্যপাড়া চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ। ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে এসেছে স্থবিরতা। করোনা আতঙ্কে লকডাউনের পর অধিকাংশই দোকানপাট, আড়ত বন্ধ রয়েছে। অনেকটা নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে ব্যস্ততম এই ব্যবসা কেন্দ্রে। ব্যবসায়ী, শ্রমিক-কর্মচারী বাড়ি ফিরে গেছেন। দিনে হাজার কোটি টাকার লেনদেনের এই বাণিজ্যপাড়ায় এখন বেচাকেনা নেই বললেই চলে। এই স্থবিরতার বড় প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে।
ব্যবসায়ীরা জানায়, করোনোভাইরাস আতঙ্কে সাধারণ ছুটি ঘোষণা ও লকডাউনের পর থেকে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট, আড়ত ও অফিস বন্ধ করে দিয়েছেন। ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বণিকদের পদচারণা সারাক্ষণ মুখরিত জনপদ এখন ভুতূড়ে জনপদে পরিণত হয়েছে। তবে কাঁচাপণ্যের আড়ত ও ভোগ্যপণ্যের কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও বেচাকেনা নেই বললেই চলে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আগতদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম পূর্বকোণকে বলেন, দিনে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে। এক সপ্তাহে ধরে দোকানপাট ও বিভিন্ন আড়ত বন্ধ রয়েছে। এতে কমপক্ষে ৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লকডাউনের সময়সীমা বাড়ছে। কখন স্থিতিশীলতা আসে আল্লাহ জানেন। তারপরও দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও করোনায় সতর্কতার জন্য বলা হয়েছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, রমজান মাসের ভোগ্যপণ্যও মজুদ রয়েছে। মাস-দুই মাস আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলে ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না। কিন্তু বেচাকেনা নেই বললেই চলে।
ভোগ্যপণ্যের বাজার স্তিমিত হলেও পেঁয়াজ, রসুন ও আদার সরবরাহ রয়েছে। এতে বাজারে পেঁয়াজের দামে বড় প্রভাব পড়েছে বলে জানান আড়তদার মো. জাবেদ ইকবাল। আড়তদার জাবেদ ইকবাল বলেন, বাজার নিম্নমুখী হওয়ার কারণে বেচাকেনা কমে গেছে।
রমজানের জন্য ভোগ্যপণ্য আমদানি করা হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানায়, রোজার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বেচাকেনায় কমে যাওয়ায় অর্থনীতিতে ধস নেমেছে।
আমদানিকারক, ট্রেডিং ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব চলছে। তার প্রভাব পড়েছে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে। কয়েক প্রকারের ভোগ্যপণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং ব্যবসায়ী মেসার্স আমান এন্টারপ্রাইজের মালিক হাজি আমান উল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববাজারে কিছুটা স্থবিরতা বিরাজ করছে। তার প্রভাব এখানেও পড়ছে। আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। এজন্য সরকারকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে নীতি-নির্ধারণ ঠিক করতে হবে। যাতে ভোগ্যপণ্যের উপর কোনো ধরনের প্রভাব না পড়ে। তিনি বলেন, বর্তমানে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। এতে অনেক ব্যবসায়ীকে বড় ধরনের ক্ষতি গুণতে হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট