চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনা ঝুঁকিতে বস্তির ১৫ লক্ষ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ এপ্রিল, ২০২০ | ৭:৩২ অপরাহ্ণ

দলে দলে বসে গল্প ও আড্ডা দিয়েই সময় পার করছে ওরা। একেক দলের রয়েছে ১০-১৫ জন।। কোন কোন দলে তার চেয়েও বেশি। একই দলে রয়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও মহিলাও। আবার দেখা যায় গল্প- আড্ডা ছাড়াও এক চুলা ও এক টিউবওয়েল ব্যবহার করছেন অনেক লোকজন। সরকার লকডাউন ঘোষণা করলেও বস্তিবাসীকে নিয়ে করোনা আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে। বাকলিয়া বাস্তুহারা বস্তি, চাক্তাই বেড়া মার্কেট বস্তিসহ পূর্ব -দক্ষিণ বাকলিয়ার বিভিন্ন বস্তির এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিন পরিদর্শনে বাকলিয়া বাস্তহারা বস্তিতে দেখা যায়, শিশুরা বিভিন্ন গলি, রাস্তায় খেলাধুলা করছে। আর বয়স্করা বিভিন্ন দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তরুণ যুবক ও বয়স্করা বিভিন্ন দলে দলে বসে আড্ডা দিচ্ছে। পুরো বস্তি এলাকা যেন আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। সরকারি খাস জমিতে গড়ে উঠা এই বস্তি। এটি নগরীর সবচেয়ে বড় বস্তি।

বস্তির সভাপতি শামসুল আলম তালুকদার বলেন, নগরীর ঘনবসতিপূর্ণ সবচেয়ে বেশি লোকের বসবাস এখানে। এখানে প্রায় ২০ হাজার পরিবারের ৩০-৩৫ হাজার লোকের বসবাস। বসবাসকারীরা দিনমজুর, রিকশাচালক, ঠেলাচালক ও নিম্ন আয়ের লোক। মহিলা ও তরুণীদের বেশিরভাগই গার্মেন্টসকর্মী। তিনি বলেন, চাকরি-বাকরি না থাকায় এবং কর্মহীন হয়ে পড়ায় লোকজন বসে আড্ডা দিচ্ছে। শিক্ষিত নয় বলে করোনার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানে না ওরা। সরকারি-বেসরকারিভাবেও কোন সংস্থার পক্ষ থেকে এদের সচেতন করা হয়নি। তাই ঘরে না থেকে রাস্তায় দোকানে বিভিন্নস্থানে আড্ডা দিচ্ছে এবং গল্পগুজব করে সময় পার করছে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, পুলিশ আসলে এসব দোকানপাট বন্ধ থাকে। পুলিশ চলে যাওয়ার পরপরই আবার দোকানগুলো খুলে যায়। তিনি বলেন স্থানীয় কাউন্সিলর ৩৫ নং বক্সিরহাট ওযার্ড কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক কয়েক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। আর কেউ এই অসহায় দরিদ্র লোকজনদের খবরও নেয়নি। একই অবস্থা দেখা যায় চাক্তাই বেড়া মার্কেট বস্তিতেও। এখানেও রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার বস্তিবাসী। এখানকার বস্তিবাসীরাও বিভিন্নভাবে আড্ডা ও গল্প করে সময় কাটাচ্ছে। অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে সবাই। এই দুটি বস্তি নগরীর বাকলিয়ার হাফেজনগর এলাকায় একটি বস্তি রয়েছে। এখানেও কয়েক হাজার লোকের বসবাস রয়েছে

বৃহত্তর বাকলিয়ায় ছোট-বড় বিভিন্ন বস্তিতে প্রায় ৫ লক্ষাধিক লোকের বসবাস রয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে। বাকলিয়া এলকার বস্তি ছাড়াও পাহাড়তলী ঝাউতলা, আমবাগান, টাইগারপাস, মতিঝর্ণা বস্তি, বায়েজিদ বোস্তামী থানার আরেফিন নগর, বাংলাবাজার, চন্দ্রনগর ও আমিন জুট মিল এলাকার বস্তিতে বসবাস কয়েক লক্ষ লোকের। নগরীতে বস্তিবাসীর সংখ্যা আনুমানিক ১৫ লক্ষ। করোনা সংক্রমণরোধে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মাক্স পরা ও স্যানিটাইজার ব্যবহার তারা করে না বললেই চলে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট