করেনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশের সকল সরকারি-বেসকারি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কিন্তু এ বন্ধের মধ্যেই কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। পছন্দের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডার পাইয়ে দিতে গোপনে এমন কায়দা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার হওয়া টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যার প্রমাণও মিলেছে। জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালের আউটসোর্সিং নিয়োগসহ ছয়টি বিষয়ে এক কোটি ২ লাখ টাকার ওপেন টেন্ডার আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যাতে গত ২৩ মার্চ টেন্ডার ড্রপের শেষ সময় ও খোলার বিষয় উল্লেখ করা হয়। তবে করোনারভাইরাসের অজুহাতে কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের ঘোষণা ছাড়াই গতকাল এ টেন্ডার ওপেন করেন। তথ্য অনুযায়ী, আসবাবপত্র ক্রয়, মোটরযান মেরামত, আউটসোর্সিংয়ের মধ্যেমে অফিস সহায়ক নিয়োগ, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং হাসপাতালের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামতের জন্য সর্বমোট ১ কোটি ২ লাখ টাকার পৃথক টেন্ডারে ২৩টি দরপত্র জমা পড়ে। এতে আউটসোর্সিংয়ে জমা পড়ে মাত্র একটি দরপত্র। যা দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন টেন্ডার পাওয়া ‘জমজম এন্টারপ্রাইজের’ নামে জমা হয়। এতে অন্য কোন টেন্ডারই জমা হয়নি। হাসপাতাল সূত্র জানায়, জমজম এন্টারপ্রাইজ দীর্ঘদিন থেকেই আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হাসপাতালের জনবল নিয়োগ দিয়ে আসছেন। যার মালিক দিদারুল আলম। যিনি চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের এক নেতার আত্মীয়। মূলত এ নেতার হস্তক্ষেপেই দীর্ঘদিন থেকে জমজম এন্টারপ্রাইজ আউটসোর্সিং খাতের টেন্ডার পেয়ে আসছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টেন্ডার ওপেনের সময় সকল প্রতিষ্ঠানকে থাকার কথা থাকলেও ওই সময়ে উপস্থিত ছিলেন মাত্র চার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তাও বর্তমানে যারা হাসপাতালের টেন্ডার পেয়ে কাজ করে আসছেন তারাই ওই সময় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এর বাইরে নতুন কোন মুখ দেখা যায়নি।
বন্ধের মধ্যে কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে টেন্ডার কার্যক্রমটি বন্ধ ছিল। যা আগের পরিচালক থাকতে এ টেন্ডারের আহবান করেন। বিষয়টি পরিচালকের সাথে কথা বলবো। আমি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।’ এদিকে হাসপাতালে নতুন পরিচালক ও উপ-পরিচালক দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এটিই প্রথম টেন্ডার। তবে অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে থাকার টেন্ডার শাখাসহ প্রশাসনিক ব্লকের কিছু কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন এমন অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালানা হয়ে আসছে।