চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

তানভীর হত্যায় ‘চেক’ রহস্য

ফেনী থেকে গ্রেপ্তার,প্রধান আসামী নেছার,নেছারকে ৫ লাখ টাকার চেক দেয়া কে সেই রাব্বি?,২১ জনকে আসামি করে বড় ভাইয়ের মামলা

আল- আমিন সিকদার

২১ মার্চ, ২০২০ | ৩:০৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে নির্বাচনী সহিংসতায় আনোয়ার জাহিদ তানভীর হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নেছার উদ্দীনকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গতকাল (শুক্রবার) ভোর ৬ টায় ফেনী সদরের আফতাব বিবির হাট এলাকার একটি পরিত্যক্ত কুঁড়েঘর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ৫ লাখ টাকার চেক ও ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় বলে পূর্বকোণকে জানান র‌্যাব-৭ এর ফেনী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার (সহকারী পুলিশ সুপার) মো. নুরুজ্জামান।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া নেছারের কাছে পাওয়া ৫ লাখ টাকার চেকের রহস্য উদঘাটন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে র‌্যাব। কারণ, চেকটিতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকলেও নেই উত্তোলনের নির্দিষ্ট কোন তারিখ। যা সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আনোয়ার জাহিদ তানভীর হত্যায় জড়িতরা এ মামলার প্রধান আসামি নেছারকে এ চেক সরবরাহ করেছে। ফলে চেকের গায়ে রাব্বি লিখে স্বাক্ষর করা সেই ব্যক্তির খোঁজ করছে প্রশাসন।   র‌্যাব কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামানও চেকের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন পূর্বকোণকে। তিনি বলেন, ‘আনোয়ার জাহিদ তানভীর হত্যাকাণ্ডের পর আত্মগোপনে থাকা প্রধান আসামি নেছার উদ্দীনকে শুক্রবার (গতকাল) ভোর ৬টায় ফেনী জেলা সদরের আফতাব বিবির হাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ৫ লাখ টাকার চেক ও ৩টি মোবাইল ফোন ও বেশ কয়েকটি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। চেকটিতে টাকা উত্তলোনের কোন তারিখ নেই। তবে রাব্বি নামে একটি স্বাক্ষর রয়েছে’। এই চেকের সাথে খুনের কোন বিষয় জড়িয়ে আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গ্রেপ্তার হওয়া নেছার উদ্দীন নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন গণি সরদারের বাড়ির মৃত ফয়েজ আহমেদের ছেলে।

গত ১৮ মার্চ বুধবার রাত সাড়ে দশটায় দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ হারান পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আনোয়ার জাহিদ তানভীর। প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে খুন হন  তিনি। এদিকে ঘটনার দিন রাতেই সোহেল ও জনি নামে দুইজনকে আটক করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় পাহাড়তলী থানায় সোহেল, জনি ও র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া নেছার উদ্দীনসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন নিহত তানভীরের বড় ভাই তৌফিক জহির।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুর রহমান পূর্বকোণকে বলেন, ‘নিহত তানভীর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী মোরশেদ আকতার চৌধুরীর সমর্থক। অন্যদিকে গ্রেপ্তার হওয়া জনি, সোহেল ও নেছার আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ইসমাইলের সমর্থক। ঘটনার সময় এই দুই কাউন্সিলর প্রার্থী কেউ ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তাদের দু’জনেরই বাসা ৫০ গজ দূরত্বের মধ্যে হওয়ায় দু’পক্ষের সমর্থকরা একই স্থানে ছিলেন। জানা যায়, মোটরসাইকেল যাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। যার একপর্যায়ে তানভীরকে ছুরকাঘাত করে নেছার । এতে আহত তানভীরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন’।

এ ঘটনায় নিহত তানভীরের বড় ভাই তৌফিক জহির থানায় ২১ জনের নাম উল্লেখসহ আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে বলেও জানান ওসি মাইনুর রহমান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট