চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনাভাইরাস: কোন দেশে কত মৃত্যু
করোনাভাইরাস: কোন দেশে কত মৃত্যু

করোনা প্রতিরোধের প্রস্তুতি: চমেক হাসপাতালে চালু হচ্ছে পৃথক কর্নার

ইমাম হোসাইন রাজু

১৬ মার্চ, ২০২০ | ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে আসা ইতালি ফেরত আরও পাঁচজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে এ পাঁচজন এ বিমানবন্দর হয়ে চট্টগ্রামে প্রবেশ করেন। পরে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ২৬ জন বিদেশফেরত হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন সর্বমোট ৩৯১ জন। এরা সকলেই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেন। স্বাস্থ্য দপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শহরিয়ার কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করে পূর্বকোণকে বলেন, ‘গতকাল দুপুরে এ পাঁচজন বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। পরে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পৃথক হেল্প ডেস্ক খোলা হচ্ছে। যেখানে শুধুমাত্র জ¦র, সর্দি, কাশি রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে। এতদিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও বহিঃবিভাগে সাধারণদের সাথে এসব রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে পারলেও এখন থেকে পৃথক কর্নারে চিকিৎসা নিতে হবে তাদের। গতকাল সোমবার চমেক হাসপাতালের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষ প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন চমেক হাসপাতালের জরুরি ও বহিঃবিভাগে। তবে এতদিন এসব রোগীদের জন্য ছিল না কোন পৃথক কর্নার। এতে করে সকলেই এক কাতারে দাঁড়িয়ে সেবা নিতেন। কিন্তু বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর হাসপাতালের প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে হাসপাতালে অবাধে প্রবেশের বিষয়টি নিয়েও কড়া নজরদারি থাকবে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জ¦র, সর্দি ও কাশি নিয়ে আসা রোগীদের পৃথকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে এসব রোগীদের মাস্ক পরার ব্যাপারেও বাধ্য করা হচ্ছে। এরমধ্যে গতকাল হাসপাতালের করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির এ সভায় এসব রোগীদের জন্য পৃথক দু’টি হেল্প ডেস্ক খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম পূর্বকোণকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এতদিন রোগীরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও বহিঃবিভাগে এসে সেবা নিতে পারলেও এখন থেকে জ¦র, সর্দি ও কাশি হওয়া রোগীদের জন্য পৃথক দু’টি হেল্প ডেস্ক খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে জরুরি বিভাগে একটি ও বহিঃবিভাগে একটি ডেস্ক থাকবে। যাতে সার্বক্ষণিক একজন লোক বসা থাকবে। যদি ডেস্কে আসা কোন রোগীকে সন্দেহ হয়, তাহলে ওই রোগীকে পৃথকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে’।
অন্যদিকে, সরকারি হাসপাতালের বাইরে চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলা ও বেসরকারি হাসপাতালে পৃথক শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালেও ২০ শয্যার পৃথক একটি ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। যদিও এখন পর্যন্ত কোন করোনাভাইরাসের রোগীই শনাক্ত হয়নি চট্টগ্রামে। তবে আগাম প্রস্তুতি রয়েছে এ অঞ্চলের স্বাস্থ্য বিভাগের। এছাড়া হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিদেশ ফেরতদের বিষয়েও নজরদারি রেখেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের টিম। যাদের বিষয়ে প্রতিদিন খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে গঠিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্তে তাদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসারদেরকেও এ বিষয়ে নজর রাখতে পৃথকভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে সবাই যদি সচেতন হয়, অবশ্যই এ ভাইরাস থেকে রক্ষা সম্ভব বলেও জানান তিনি।;

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট