চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অদক্ষতায় শম্বুক গতির কাজ
অদক্ষতায় শম্বুক গতির কাজ

মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স

অদক্ষতায় শম্বুক গতির কাজ

পাইলিং শেষ হয়নি এখনো, মেয়াদ আর মাত্র ৫ মাস

মরিয়ম জাহান মুন্নী

১৫ মার্চ, ২০২০ | ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ

প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে বাকি আছে আর পাঁচ মাস। এখনো পাইলিংয়ের কাজও শেষ হয়নি সরকারি গণগ্রন্থাগার মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স ভবনের। কথা ছিলো দুই বছরের মধ্যে ১৫ তলাবিশিষ্ট এই ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, এই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর গত দেড় বছর ধরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের সড়কটি বন্ধ আছে। যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা। সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারে না ওই সড়ক দিয়ে।
২০১৮ সালের আগস্টে প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হলেও গত দেড় বছরে মাত্র একপাশের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, অদক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার কারণে বাড়েনি কাজের গতি। মন্থর গতিতে চলা এই কাজের মান নিয়েও উঠছে অনেক প্রশ্ন। অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে করা হচ্ছে নির্মাণ কাজ।
জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জিতু বলেন, কাজটি শুরু করার আগে পুরাতন ভবনগুলো ভাঙাসহ আরো বেশ কিছু সমস্যা ছিল। সেই সমস্যাগুলো সমাধানের পরেই কাজ শুরু করা হয়। এ কারণে কাজ শেষ হতে সময় লাগছে। এছাড়া প্রকল্পের অধীনে এক লাখ ৩৭ হাজার ৮শ’ বর্গফুটের মধ্যে আমরা এখনো পর্যন্ত একপাশ বুঝে পেয়েছি। শহীদ মিনারের পাশের অংশ এখনো আমাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। এটি বুঝে পেলেও সে অংশে পাহাড়সহ কিছু জটিলতা রয়েছে। এসব কিছু ঠিক হওয়ার পরেই পুরোদমে কাজ শুরু করা সম্ভব। নির্ধারিত মেয়াদে মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হবে।
প্রকল্পের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লি. এর উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক এ কে এম মনিরুজ্জামান জানান, পুরো প্রকল্পের মধ্যে ইতোমধ্যে অর্ধেক জায়গায় কাজ চললেও প্রকল্পের আওতায় থাকা ভবনের বিপরীত পাশে এখনো শুরু হয়নি নির্মাণ কাজ। কবে শুরু হবে তাও বলা যাচ্ছে না।
মনিরুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হওয়া প্রকল্পের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর। যদিও পুরোনো বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার ভবন ভাঙার কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল। শেষ হয় গত ২ জুলাই। নতুন জায়গায় একটি ভবন তৈরি যত সহজ-পুরোনো ভবন ভেঙে কাজটি করা কঠিন। তবে এটি হবে চট্টগ্রামের একটি আইকনিক স্থাপনা। যেখানে পাঠচর্চা, সংস্কৃতিচর্চা, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনসহ সৃজন ও মননশীল মানুষের মিলনমেলা বসবে প্রতিদিন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও স্থাপত্য অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প ২০১৭ সালের নভেম্বরে একনেকে পাস হয়। ২৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকার এ প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ১৬৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে কাজ শুরু করছে জিকেবি এন্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড ও এনডিই ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জেভি)। প্রকল্পের অধীনে ১৫ তলা লাইব্রেরি ভবনে ৭৭ হাজার ৪৯২ বর্গফুটের আট তলায় অডিটোরিয়াম, ৬৫ হাজার বর্গফুটের বেসমেন্টসহ ১১২টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, নতুন শহীদ মিনার তৈরি, মূল সড়কের ওপর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের যাতায়াতের জন্য টানেলের মতো ওভারপাস তৈরি, এক লাখ ৩১ হাজার ২৭৫ বর্গফুট জুড়ে পাবলিক প্লাজা, ২৫০ জনের ওপেন এয়ার থিয়েটার, মসজিদ, মার্কেট, পুকুর, ল্যান্ডস্কেপ, ফুড গার্ডেন, ক্যাফেটেরিয়া, মিউজিয়াম নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পে ১শ জনের একটি, ২শ জনের আরেকটি একটি সেমিনার হল ও ৩৫০ জন ও ৭৮০ জন ধারনক্ষমতার দুটি থিয়েটার হল থাকবে। এ ছাড়া সেমিনার ও মিটিং রুম, জেনারেল লাইব্রেরি, চিলড্রেন’স লাইব্রেরি, নিউজ পেপার লাইব্রেরি, রেফারেন্স লাইব্রেরি, সায়েন্স লাইব্রেরি, ট্রেনিং ইউনিট, আইসিটি ইউনিট, গেস্ট হাউস থাকবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট