চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

হাতির জন্য শত কোটি টাকার ওভারপাস
হাতির জন্য শত কোটি টাকার ওভারপাস

দোহাজারী-ঘুনধুম রেল লাইন

হাতির জন্য শত কোটি টাকার ওভারপাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ মার্চ, ২০২০ | ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

দোহাজারী থেকে রামু-কক্সবাজার ও রামু হয়ে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম পর্যন্ত সড়কপথের ১১টি পয়েন্ট দিয়ে হাতি চলাচল করে। আর এ পথেই নির্মাণ হবে ১২৭ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথ। হাতি চলাচলের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে ফুটওভার ব্রিজ দিয়েই হাতি চলাচল করবে, নাকি রেললাইন উঁচু করতে হবে, তা মাথায় রেখেই রেলপথ নির্মাণের কথা ভাবছে।
জানা যায়, রুটটির ছয়টি পয়েন্ট দিয়ে প্রায় সারাবছরই হাতি চলাচল করে। আর পাঁচটি পয়েন্ট দিয়ে চলাচল করে অনিয়মিতভাবে। মূলত খাবারের সন্ধানে রামু-কক্সবাজার রুটের এক পাশ থেকে অন্য পাশে আসে হাতির দল। ছয়টি পয়েন্টের একটি থেকে অন্যটির মাঝে দূরত্বও অনেক। এ ছাড়া কিছুটা উঁচু-নিচু রাস্তা হওয়ার কারণে হাতির চলাচল নির্বিঘ্ন রেখে রেলপথ নির্মাণ বেশ জটিল হয়ে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে দুটিস্থানে হাতি চলাচলের জন্য ওভারপাস নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান বলেন, বিশ্বের কোথাও রেললাইনের ওপর কিংবা নিচ দিয়ে হাতি চলাচলের নজির নেই। আমরাই প্রথম চিন্তা করছি। এ বিষয়ে বন বিভাগের কিছু গবেষণা আছে। তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) নিজ থেকেই একটি গবেষণা করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে যারা এ বিষয়ে দক্ষ, তাদের নিয়েই কাজটি করছে এডিবি। তারা যেভাবে বলবেন, সেভাবেই হাতি চলাচলের পথ নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে হাতি চলাচলের জন্য দুটি ওভারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে একটি লোহাগাড়ার চুনতি ফরেস্ট গেট এলাকা ও অন্যটি রামু-ঘুমধুম সড়কে। তিনি আরো বলেন, থারমাল ইমেজিং ক্যামেরা (টিইসি) বসানোর পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে। রেল লাইনটি চালুর আগে এটি স্থাপন করা হবে। এটির ধারণক্ষমতা সিসি ক্যামেরা থেকে শতভাগেরও বেশি। আর সে কারণে অনেক দূর থেকে এই ক্যামেরার মাধ্যমে হাতির আগমন শনাক্ত করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়ক যত সহজে উঁচু কিংবা নিচু করা যায়, রেললাইনের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। উঁচু-নিচু করতে হলে অনেক দূর থেকে করতে হয়। রামু-কক্সবাজার পথে দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত সমান্তরাল রেললাইন করতে গেলে হাতি চলাচলের ফুটওভার ব্রিজ অনেক বড় ও বিস্তৃত পরিসরে করতে হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনকালে হাতি চলাচলের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় প্রস্তাব করা হয় ১৭৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রুটে হাতি চলাচলের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১৩১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আর রামু-ঘুমধুম রুটে এ কাজে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। দোহাজারী-ঘুমধুম রেল লাইন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। গত ডিসেম্বরে প্রকল্পটির ব্যয় চূড়ান্ত করা হয়ে ছিল ১৩ হাজার ২৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আর ২০১০ সালের জুলাইয়ে প্রথম দফা অনুমোদনের সময় রেলপথটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট