চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বৃষ্টি হলেই বড় বিপর্যয়!
বৃষ্টি হলেই বড় বিপর্যয়!

জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প

বৃষ্টি হলেই বড় বিপর্যয়!

মোহাম্মদ আলী

১৪ মার্চ, ২০২০ | ৩:২০ পূর্বাহ্ণ

বৃষ্টি হলেই নগরীতে বিপর্যয় ঘটবে। মেগা প্রকল্পের চলমান কাজ সহসা শেষ না হলে জলাবদ্ধতা প্রকট রূপ ধারণ করবে। সড়ক একাকার হয়ে যাবে কাদায়। নগর জীবন হয়ে যাবে অচল। এমনই আশঙ্কার কথা বলেছেন নগরীর ভুক্তভোগী জনগণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর প্রধান খালসমূহে রয়ে গেছে বাঁধ। বিশেষ করে আবর্জনায় ভরে গেছে চাক্তাইখাল। অন্যান্য খালগুলোর সম্প্রসারণ কাজ শেষ করা যায়নি। এছাড়া নালা-নর্দমার কাজ চলছে মন্থর গতিতে। বিশেষ করে নগরীর লাইফ লাইন এশিয়ান হাইওয়ের উভয় পাশের নালার কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। একই অবস্থা অন্যান্য সড়কের নালাসমূহেরও। যেসব নালা দিয়ে বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাষণ হয়।
নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড। প্রকল্পের অধীনে নগর জুড়ে চলছে খাল ও নালা সম্প্রসারণ কাজ। কিন্তু বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ নানা কারণে কাজ চলছে ধীরগতিতে। এ কারণে নালার নোংরা পানি উপচে পড়ছে সড়কে। এতে পথচারীদের চলাচলেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে যে কোন মুহূর্তে বৃষ্টি হলে নগর জুড়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রকল্প নিয়ে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আলী আশরাফ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমরা একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে কিংবা কত শতাংশ কাজ হয়েছে তার কোন তথ্য আমার হাতে নেই। তাই এ মুহূর্তে তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না’।
জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অধীনে ডোমখালী খালের সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ চলছে। নগরীর বহদ্দারহাট মোড় থেকে শুরু হয়েছে প্রকল্পটির কাজ। এ কাজের জন্য খালের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে পানি নিষ্কাষণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় বৃষ্টি হলে বিশাল এলাকা জুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই অবস্থা অন্যান্য খালেরও। নগরীর এশিয়ান হাইওয়ের ষোলশহর ২নং গেট থেকে শুলকবহর পর্যন্ত চশম খালের সম্প্রসারণ কাজ চলছে মন্তরগতিতে। অথচ এ খাল দিয়ে বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাষণ হয়ে থাকে। কিন্তু কাজের মন্থরগতির কারণে বৃষ্টি হলে এশিয়ান হাইওয়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
প্রকল্প সম্পর্কে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী দৈনিক পূর্বকোণকে জানান, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অধীনে ৩৪টি খালের সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া নালার সম্প্রসারণও করা হচ্ছে। কিন্তু বৈদ্যুতিক খুঁটি প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নালা সম্প্রসারণে। সিডিএ এভিনিউসহ বিভিন্ন এলাকায় এ খুঁটির কারণে আটকে আছে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ। তারপরও আসন্ন বর্ষার কথা বিবেচনা করে জনভোগান্তি কমানোর লক্ষে আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সবগুলো নালা পরিষ্কার করে পানি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে। এরপর এগুলো স্ব-স্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তারাই এগুলো নিয়মিত পরিষ্কারের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএ’র ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ সময় ২০২০ সালের জুন মাস। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ বছরের ৯ এপ্রিল সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করে সিডিএ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট