চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চমেক হাসপাতাল

নষ্ট পড়ে আছে কয়েক কোটি টাকার মেশিন

প্রতিষ্ঠার পর থেকে নেই বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার

ইমাম হোসাইন রাজু

১১ মার্চ, ২০২০ | ৩:২০ পূর্বাহ্ণ

২০১৮ সালে নারীদের স্তন টিউমার ও ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে চমেক হাসপাতালে স্থাপন করা হয় ম্যামোগ্রাফি মেশিন। প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের আধুনিক এ মেশিন চালুর কয়েক মাস পরেই অচল হয়ে পড়ে। বছরখানেক পর কর্তৃপক্ষ তা সচল করলেও কিছুদিন পর ফের বন্ধ হয়ে যায়। গত ছয় মাস ধরেই পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে আছে কোটি টাকার এ যন্ত্রটি।
একই অবস্থা প্রায় ছয় কোটি টাকা মূল্যের ইন্ট্রা অপারেটিভ ইমেজিং সিস্টেম মেশিনটিরও। ২০১২ সালে সার্জারির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো ইন্ট্রা অপারেটিভ ইমেজিং সিস্টেম মেশিন। কিন্তু দীর্ঘ আট বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত স্থাপন হয়নি এটি। যা পুরোপুরিই নষ্ট হওয়ার পথে।
শুধু এ দু’টি মেশিনই নয়। প্রতিবছর বছর চমেক হাসপতালে যোগ হওয়া নতুন নতুন মেশিনগুলো সামান্য ত্রুটি হলে দেখার মতো কেউই নেই। যার কারণে হাসপাতালের বেশিরভাগ মেশিনই অচলের পথে। এসব মেশিন মেরামত কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবল থাকার কথা থাকলেও তাও নেই। ত্রুটি কিংবা মেরামতের জন্য সরকারিভাবে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার বা টেকনোলজিস্টের পদ থাকলেও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তাও শূন্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বেশিরভাগ মেশিন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ক্রয় করা হয়। এরবাইরে হাসপাতালের নিজস্ব বরাদ্দে কিছু মেশিন বা যন্ত্রাংশ ক্রয় করলেও ত্রুটি সারাতে নির্ভর করতে হয় সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর। অনেক সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর ইঞ্জিনিয়ার খবর পাওয়া মাত্র সাড়া দিলেও বেশিরভাগই পিছুটানে থাকেন। যার কারণে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকে এসব যন্ত্রাংশ। এতে করে স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায় এসব মেশিন।
শুধু তাই নয়, নতুন কোন মেশিন যুক্ত হওয়ার পর কিছুদিন রোগীরা সেবা পেলেও ছোটখাটো ত্রুটি থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। যার কারণে কোটি টাকা খরচ করে এসব মেশিন থেকে যে পরিমাণ সেবা পাওয়ার কথা তা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। সেবা বঞ্চিতের পাশাপাশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকারও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাত কোটি টাকা মূল্যের আধুনিক যন্ত্রাংশ বা মেশিন ক্রয় করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। ইতোপূর্বে এসব মেশিন ক্রয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে মেশিনগুলো রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা মেরামতে বিষয়ে কোন কিছুই নির্ধারণ করেনি কমিটি। তাই অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় এসব গুরুত্বপূর্ণ মেশিনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ান নিয়োগের পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবল প্রয়োজন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম পূর্বকোণকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘টেকনিশিয়ানের বিষয়ে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। যার কারণে এসব যন্ত্রপাতি দেখাশোনা করারও কিছুটা সমস্যা হয়। যদিও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসে মেরামত করে দেয়, তবে নিজস্ব লোক থাকলেও অনেকটাই দুর্ভোগ লাঘব হতো। তবুও এ বিষয়ে পুনরায় সংশ্লিষ্টদের জানানো হবে বলেও জানান তিনি’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট