চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

গা শিউরে উঠা সহস্রাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বসতি কাপ্তাইয়ে
গা শিউরে উঠা সহস্রাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বসতি কাপ্তাইয়ে

ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কা

গা শিউরে উঠা সহস্রাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বসতি কাপ্তাইয়ে

মনে হয় এই বুঝি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লো

আবুল কালাম আজাদ, কাপ্তাই

১০ মার্চ, ২০২০ | ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ

কাপ্তাই নতুন বাজার ঢাকাইয়া কলোনিতে কমপক্ষে ৭শ ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে। এসব বসতির অধিকাংশ টিনের চাল এবং বাঁশের বেড়ার তৈরি। আবার বেশ কয়েকটি রয়েছে সেমিপাকা। রয়েছে টিনের তৈরি দ্বীতল বাড়ি। পাহাড়ের ঢালে গাছের খুঁটি গেড়ে এমনভাবে ঘর বাড়ি তৈরি করা হয়েছে যা দেখলেই গা ছমছম করে উঠে। দেখে মনে হবে এই বুঝি ঘরবাড়ি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লো।
এছাড়াও ঢাকাইয়া কলোনী সংলগ্ন ব্যাঙছড়ি ও শিলছড়িতেও রয়েছে তিন শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বসতি। এসব বসতি ধসে পড়ে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। হতে পারে ব্যাপক প্রাণহানি। ঢাকাইয়া কলোনি, ব্যাঙছড়ি ও শিলছড়ি এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, শতশত ঘরবাড়ি একটি আরেকটির সাথে গায়ে গা ঘেঁষে লাগানো। একটি ঘর যদি ভেঙে পড়ে সাথে সাথে অনেক গুলো ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর যদি কোনভাবে একটি ঘরে আগুন লাগে তা হলে শতশত ঘরবাড়ি মুহূর্তে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবার আশঙ্কাও রয়েছে।
ঢাকাইয়া কলোনীতে শতশত পরিবারের বসতি থাকলেও এখানে ন্যূনতম মানবিক সেবা পাবার সুযোগ নেই। কোন রকম দুর্ঘটনা ঘটলে এ্যাম্বুলেন্সতো দূরের কথা এখানে একটি অটোরিকশাও প্রবেশ করা সম্ভব নয়। পানীয় জলের পর্যাপ্ত সুবিধা এখানে নেই। নেই পয়ঃনিষ্কাশনের স্বাস্থ্যসম্মত সুযোগ। এখানে সারাক্ষণ নিঃশ্বাসের সাথে মানুষের শরীরে অনবরত বিষ ঢুকছে। প্রতি বছর ভারী বৃষ্টির সময় এসব এলাকার লোকজনকে পাশ্বর্বর্তী কাপ্তাই উচ্চবিদ্যালয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। আবার পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে সবাই পুণরায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতিতে ফিরে আসে।
কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ জানান, এ বিষয়ে অনবরত প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পুলিশ প্রশাসন এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্যও একাধিকবার ঢাকাইয়া কলোনি পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু এসব এলাকার জনগণকে পুনর্বাসন করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, মূলত খাস জমি না থাকায় এসব এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদস্থানে সরিয়ে নেওয়া যাচ্ছেনা। কাপ্তাইয়ের চতুর্দিকে যেসব জমি রয়েছে তার পুরোটাই হয় বন বিভাগের, না হয় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। অথবা কর্ণফুলী পেপার মিলের নিজস্ব জায়গা। কাপ্তাই মৌজা হলে এখানে পর্যাপ্ত খাস জমি পাওয়া যাবে। তখন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারিদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট