চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’র কর্মসূচিতে বক্তারা

বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের কাছে অনন্য উদাহরণ

পূর্বকোণ ডেস্ক

৮ মার্চ, ২০২০ | ২:০১ পূর্বাহ্ণ

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের উদ্যোগে গতকাল (শনিবার) ব্যাপক কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, বিশ্ব মানচিত্রে যতদিন বাংলাদেশ টিকে থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতিকে প্রেরণা যোগাবে। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ শুধু বাঙালি জাতি নয়, পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের কাছে অনন্য উদাহরণ।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও শিশু একাডেমি : প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। শিশু প্রতিনিধি আয়মানের সভাপতিত্বে ও একাডেমির প্রশিক্ষক তানভীরুল ইসলাম নাহিদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আবু হাসান সিদ্দিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু একাডেমির জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা নারগিস সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মমতা’র নির্বাহী প্রধান রফিক আহমেদ ও সংবাদ সংস্থা এনএনবি’র চট্টগ্রাম প্রধান রনজিত কুমার শীল। শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনান শিশু শিক্ষার্থী আয়মান। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু স্মরণে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিশু শিক্ষার্থী নাজমুল হুদা, ¯েœহা বড়–য়া ও রাইফা। তবলায় সহযোগিতা করেন একাডেমির প্রশিক্ষক ছোটন চক্রবর্তী। আলোচনা সভা শেষে চিত্রাংকন ও ভাষণ প্রতিযোগিতায় ক, খ ও গ গ্রুপে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আবু হাসান সিদ্দিকসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে সাফীরাহ মাকারিম- ১ম স্থান, প্রাঞ্জল দাশ -২য় স্থান ও ওমেরা ফিদান -৩য় স্থান, ‘খ’ গ্রুপে সুবাহনা শওকত-১ম স্থান, নুসরাত জাহান প্রীতি-২য় স্থান ও প্রদীপ্ত দে-৩য় স্থান, ‘গ’

গ্রুপে সাজিয়া আফরিন-১ম স্থান, দীপ্ত আচার্য-২য় স্থান ও অংশুল সাহা-৩য় স্থান অর্জন করেন।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে আয়মান ফারদিন-১ম স্থান, শ্রাবস্তী বড়–য়া-২য় স্থান ও শামসুন নাহার-৩য় স্থান এবং ‘খ’ গ্রুপে অন্যান্য চৌধুরী-১ম স্থান, নাফিসা আনজুম রাইসা-২য় স্থান ও অনুভা ভট্টাচার্য ৩য় স্থান অর্জন করেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আবু হাসান সিদ্দিক বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রেখেছে। এই ভাষণের মাধ্যমে জাতির পিতা নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করেছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুধু বাঙালি জাতিকেই অনুপ্রাণিত করেছিল তা নয়, বরং এ ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বের সব অবহেলিত ও বঞ্চিত জাতি-গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকবে।
শেষে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মহানগর আওয়ামী লীগ : সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে শুধু একটি স্বাধীন পতাকা ও স্বনির্ভর নয়, ছিলো জাতীয় মুক্তির নির্দেশনা। এই নির্দেশনায় খুঁজে পাই গণমানুষের ৫টি মৌলিক অধিকার-অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। এই নির্দেশনা পালন ও ধারণ করতে পারলে আমরা এ জাতিকে মুক্তির ঠিকানায় পৌঁছে দিতে পারবো।
তিনি গতকাল বিকেলে থিয়েটার ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় একথাগুলো বলেন। তিনি আরো বলেন, আমরা মুখে অনেক কথা বলি, তবে তা কতটুকু বাস্তবায়ন করি তা অনুধাবন করি না। একটা বিষয় সকলের জন্য বিবেচ্য-শুধু ব্যক্তি স্বার্থ নয়, দল ও রাষ্ট্রের জন্য যা মঙ্গলময় সে জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে চসিক নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের মধ্যে ছোট-খাটো মত ভিন্নতা থাকতে পারে, তবে বিভ্রান্তি নয়, এবং আদর্শ বিচ্যুতি নয়, ঐক্যই আমাদের শক্তি। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন। উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সহ-সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা শফর আলী, শেখ মোহাম্মদ ইছহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, সম্পাদকম-লীর সদস্য এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, জহুর আহমেদ, জালাল উদ্দিন ইকবাল, দেবাশীষ গুহ বুলবুল প্রমুখ।
গতকাল সারাদিনব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ মাইকযোগে সম্প্রচার, সকালে দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেছেন, ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ মুক্তিযোদ্ধাদের হাসিমুখে জীবন দিতে উদ্বুদ্ধ করত। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ শুধু বাঙালি জাতি নয়, পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের কাছে অনন্য উদাহরণ। একাত্তরে ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বক্ষণ পর্যন্ত মূলত বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ পরিচালিত হয়েছিল। বিশ্ব মানচিত্রে যতদিন বাংলাদেশ টিকে থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতিকে প্রেরণা যোগাবে। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেই প্রকারান্তরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গতকাল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম.এ সালামের সভাপতিত্বে ও পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান। আলোচনায় অংশনেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দিন, মো. আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, নুরুল আনোয়ার চৌধুরী বাহার, স্বজন কুমার তালুকদার, মোহাম্মদ আলী শাহ, মহিউদ্দিন বাবলু, মহিউদ্দিন রাশেদ, জাফর আহমেদ, ফোরকান উদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট এম.এ নাসের চৌধুরী, ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী, মো. সেলিম উদ্দিন, উর্ত্ত জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক এস.এম রাশেদুল আলম, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদিকা এডভোকট বাসন্তী প্রভা পালিত, উত্তর জেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি বখতেয়ার সাইদ ইরান, বর্তমান সভাপতি তানভির হোসেন তপু, সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে এম.এ সালাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এযাবতকালের পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ। তাঁর ভাষণের রেশ ধরেই এদেশের মুক্তিকামী জনতা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ : সংগঠনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ১৯ মিনিটের সেই অলিখিত জাতিকে দিক নির্দেশনা মূলক ভাষণটির মধ্য দিয়ে পুরো জাতি স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়েছিল। নিরস্ত্র বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধভাবে শোষণ অত্যাচারের বিরুদ্ধে তথা স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আজ বাংলাদেশ, বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু বিশ্বসমাজে আরো মর্যাদাবান হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ধারাবাহিক আন্দোলন ও লাখো শহীদের জীবনদানে এই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশ কোন অপশক্তির কাছে পদানত হবেনা। ইতিহাসের সঠিক বিচারে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন।
তিনি গতকাল ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন উপলক্ষে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
সংগঠনের আন্দকিল্লাস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সেই ভাষণের আবেদন আজো ফুরিয়ে যায়নি। মিথ্যাচার ষড়যন্ত্র বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে তা অফুরন্ত প্রেরণা হয়ে থাকবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী, আইন সম্পাদক এডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট জহির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, শ্রম সম্পাদক খোরশেদ আলম, দপ্তর সম্পাদক আবু জাফর, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এমরান, প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, ধর্ম সম্পাদক আবদুল হান্নান চৌধুরী মঞ্জু, স্বাস্থ্য সম্পাদক তিমির বরণ চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট কামরুন নাহার, চন্দনাইশ পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম খোকা,
দক্ষিণ জেলা যুবলীগ সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী, সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও সাতকানিয়া পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী খালেদা আক্তার, কৃষ্ণা রানী দাশ, জীবন আরা বেগম, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট