চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

আবারো বাড়লো সংসার খরচ

সাইমুম চৌধুরী

৪ মার্চ, ২০২০ | ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

আম-জনতার প্রতিদিনের খরচ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনের চালের দাম বেড়েছে কয়েক দফা। তার সাথে বেড়েছে আটা ময়দা চিনি ডাল ভোজ্য তেল পেঁয়াজ রসুনসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্য দ্রব্যের দাম। এতে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। শহর এলাকার একজন মাঝারি আয়ের পরিবারকে মাসে ভ্যাট ছাড়া বিদ্যুৎ বিল (বর্তমানে দিতে হয় ২ হাজার ৪৩৩ টাকা। আগামী এপ্রিল থেকে তাদের বাড়তি ১৩৩ টাকা দিতে হবে। তাতে তাদের এখন দিতে হবে ২ হাজার ৫৬৬ টাকা। এতে লাইফ লাইন (হতদরিদ্রদের জন্য সর্বনি¤œ হার) ছাড়া ছয়টি ধাপে আবাসিক গ্রাহকদের সর্বনি¤œ ১৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫৬১ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল বাড়বে। আবাসিক ছাড়া কৃষি, শিল্পসহ সব ধরনের বিদ্যুতের দাম বেড়েছে গড়ে ইউনিট প্রতি ৩৬ পয়সা। এতে বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। উল্লেখ্য এ নিয়ে গত ১০ বছরে আটবার খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো। জানা যায় সরকারের নতুন করে বিদ্যুতের এই মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর করা হবে মার্চ/২০২০ থেকে। গ্রাহকদের মার্চের বিল এপ্রিলে পরিশোধ করতে হবে। তবে যেসব গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার রয়েছে, তাদের মার্চ/২০২০ মাস থেকে বিদ্যুতের বিল নতুন দামে দিতে হবে। উল্লেখ্য সর্বশেষ ২০১৭ সালের নভেম্বরে পাইকারি বিদ্যুতের দাম সরকার গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়েছিল যা ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছিল। এ নিয়ে সরকার গত ১০ বছরে ৮ বার খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ালো।

বলতে দ্বিধা নেই ১০বছরে ৮ বার মানে বছরে ১ বার (প্রায়) বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। আমরা জানি বিদ্যুতের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য, কল কারখানার উৎপাদন সবকিছুই জড়িত। তাই বিদ্যুতের দাম বাড়লে আখেরে সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি হবেই। আর মূল্যবৃদ্ধি হলে সবচেয়ে বেশি দুর্দশায় পড়ে স্বল্প আয়ের মানুষেরা। বড় বড় শিল্পপতি এবং ব্যবসায়ীরা তাদের মালামালের দাম বাড়িয়ে পুষিয়ে নেন। নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের মাস চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে বাজারের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে স্বল্প আয়ের মানুষ অসহায়, তৈরি পোশাক সহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান আর্থিক ঝুঁকিতে তখন সরকারের বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ানো কতটা যৌক্তিক? বিইআরসি’র চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, বিদ্যুৎ খাতের লোকসান কমানোর জন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ দিকে জ¦ালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল না। তাঁরা আরো বলেছেন সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও পিডিবি বছরে ৫০০ কোটি টাকা লাভ করছে যা আইনানুযায়ী করতে পারে না। পিডিবি সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের দায়িত্ব জনগণকে সেবা দেয়া, মুনাফা করা নয়। অতি সম্প্রতি চীনের কোরোনা ভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব আমাদের অর্থনীততে পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে দেশের বাজারে বিদেশ থেকে আমদানি করা চিনি, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, রসুনসহ অনেক ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। একটি বিষয় অতীব বাস্তব, তা হলো দেশের ব্যবসায়ী মহল যে অতিরিক্ত মূল্য আমজনতার পকেট থেকে নিচ্ছেন তা ব্যবসায়ীদের পকেটেই যচ্ছে। সরকারের এতে কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং গুটিকয়েক ব্যবসায়ী লাভবান হচ্ছে। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ আমজনতার কথা চিন্তা করে বিদ্যুতের ও পানির দাম বৃদ্ধি আপাতত স্থগিত রাখুন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট