চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সিএমসিসিআই’র চিঠি দেশে দ্রুত পোশাকশিল্প বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৩:২২ পূর্বাহ্ণ

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীন থেকে কাপড় না আসলে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি পোশাক শিল্পের ক্ষতি হবে তাই বাহিরের কাপড়ের উপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষে, দেশে দ্রুত ব্যাপক কাপড় উৎপাদন শিল্প স্থাপন প্রয়োজন।

বিরাজমান অবস্থায় চীন থেকে কাপড় আমদানি সংকট নিরসন না হলে দেশ থেকে পোশাক রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত’ হবে। যেহেতু বহু শ্রমিক কর্মচারী ছাড়াও দেশের ব্যাংক, বীমা, পরিবহন, বন্দর, শিপিং, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পসহ আরও নানা খাতে এই শিল্পের সাথে দেশের প্রায় ২ কোটি লোকের কর্মসংস্থান জড়িত, তাই দেশের রপ্তানি কমলে ব্যাংক বীমা ইত্যাদি খাত থেকে রাজস্ব আয়ও অনুপাতিক হারে কমে যায়। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীন থেকে কাপড় আমদানি কমে যাওযায় ইতিমধ্যে বন্দরে জাহাজ আগমন ও কাপড় আসা কমে গেছে। কাপড় কম আসায় ইতিমধ্যে বহু পোশাক শিল্প বন্ধ হওয়ার পথে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস কোরিয়াসহ অন্য দেশে ছড়াচ্ছে। এছাড়া কোরিয়া বা অন্য দেশে কাপড়ের দাম তুলনামূলক বেশি, আমাদের পরিবহন ব্যয় ও লিড টাইম বেশি ইত্যাদি কারণে সেখান থেকে কাপড় এনে রপ্তানি মূল্য প্রতিযোগীতায় আমাদের ঠিকে থাকা কঠিন। এমতাবস্থায়, অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় কাপড় উৎপাদনে ব্যাপকভাবে বস্ত্রশিল্প স্থাপনের জন্য করণীয়;

১. সরকারি-বেসরকারি বস্ত্রমিল সমূহে দ্রুত বি.এম.আর.ই করা ও বন্ধ সকল সরকারি বস্ত্র মিল চালু করার ব্যবস্থা প্রয়োজন।
২. উন্নতমানের কটন কাপড়, উন্নত মানের রেয়ন, বিসকস, সিনথেটিক কাপড় ইত্যাদি উৎপাদনের জন্য দেশের বিভিন্ন ইপিজেডও অর্থনৈতিক জোন সমূহে বা সরকারি জায়গায় আগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম ৫ বৎসরের কিস্তি পরিশোধ ব্যতিত ২৫ বৎসরে জমি মূল্য পরিশাধের শর্তে বিশেষ প্রনোদনা ঘোষণা করা প্রয়োজন।
৩. বস্ত্রশিল্পে উন্নতমানের আধুনিক মেশিনারি এবং কারখানা নির্মাণের জন্য অগ্রসর অনুপাতে প্রদেয় ২৫ বৎসরে পরিশোধ শর্তে সর্বাধিক ৩% সুদে প্রজেক্ট মূল্যের ৯০% অর্থ ঋণ প্রদানের প্রণোদনা থাকলে দীর্ঘ মেয়াদী এই শিল্পের জন্য উদ্যোক্তা আসবে।
৪. জাতীয় প্রয়োজনে ব্যাংকের মোট ঋণের নূন্যতম ২০% বস্ত্র শিল্পে ঋণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা প্রয়োজন।
৫. বস্ত্রখাতে শিল্প সমূহের জন্য ১৫ বৎসরের ট্যাক্স হলিডে থাকতে হবে।
৬. বস্ত্রখাতের ওভেন ও নীট কাপড় উৎপাদন ফ্যাক্টেরি সমূহের জন্য উৎপাদন তারিখ থেকে ১০ বৎসর যাবৎ ৫০% ভর্তুকি মূল্যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সুবিধার প্রণোদনা থাকলে অনেকেই বস্ত্রখাতে শিল্পায়নে এগিয়ে আসবে।
৭. তুলা আমদানির উপর শুল্ক ০% হার করলে কাপড়ের উৎপাদন দাম কমবে, ফলে বেশি বায়ার এদেশে আসবে।
৮. জাতীয় প্রয়োজনে দেশে পোশাক শিল্প সুরক্ষায় উক্ত বিষয়াদি কার্যকর করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, একনেক এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সহকারে একটি কমিটি থাকতে পারে।
আমরা মনেকরি উপরোক্ত মতে বস্ত্রখাতে প্রণোদনা আসলে দেশে বহু বস্ত্র শিল্প আসবে। আধুনিক মেশিনারিতে দেশে উন্নতমানের যথেষ্ট কাপড় উৎপাদন হবে। হাজার হাজার কোটি ডলারের কাপড় আমদানির বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমবে। দেশে কাপড় থাকলে বায়ারের পোশাক নেয়ার লিড টাইম কমবে। বায়ারের ব্যাংক সুদ কম লাগবে বলেই দেশে বহু নুতন বায়ার আসবে। দীর্ঘ ৪০ বৎসরে দেশে পোশাক শিল্পে আমাদের যে দক্ষতা অর্জিত হয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে এই শিল্প থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি আয় সম্ভব হবে। আমরা মনে করি করোনা ভাইরাসের কারণে আতংকিত না হয়ে, দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ কতৃক প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকলে এবং উপরোক্ত প্রস্তাব মতে দেশে কাপড় উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আসলে করোনা ভাইরাসের কারণে বস্ত্রশিল্পের উন্নয়নটা আমাদের দেশেকে বরং আরো একধাপ এগিয়ে দেবে। জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।-বিজ্ঞপ্তি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট