চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

রেজাউলের চেয়ে শাহাদাত সম্পদশালী
রেজাউলের চেয়ে শাহাদাত সম্পদশালী

রেজাউলের চেয়ে শাহাদাত সম্পদশালী

হলফনামার বিশ্লেষণ

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৩:০৫ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর চেয়ে সম্পদশালী বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। তবে শাহাদাতের আয় যেমন বেশি তার ঋণও বেশি। রেজাউল করিমের আয় ও ব্যাংক ঋণ দুটি কম। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

হলফনামায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর বার্ষিক আয় চার লাখ ১৪ হাজার টাকা। আর বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাতের বছরে আয় ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৬২৫ টাকা। এছাড়াও বাড়ি, এপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ আয় ৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৫ টাকা, পেশাগত আয় ১৭ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা।

রেজাউল করিম চৌধুরী : রেজাউল করিম চৌধুরীর বার্ষিক আয় বাড়ি এপার্টমেন্ট, দোকান থেকে চার লাখ ১৪ হাজার টাকা। ব্যবসায় নিজের কোন আয় না থাকলেও নির্ভরশীলদের আয় তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা। ফার্মের শেয়ার থেকে নিজের আয় দুই হাজার একশ টাকা ও নির্ভরশীলদের আয় ৫০ হাজার ৩০০ টাকা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে আছে নগদ টাকা এক লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে তিন লাখ ৫১ হাজার ৪০৯ টাকা। নিজের নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে সাত লাখ আট হাজার ৫৩৯ টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ৩২ লাখ ২৭ হাজার ৯০ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস নিজের নামে না থাকলেও স্ত্রীর নামে আছে ২০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড। নিজ নামে একটি চার লাখ টাকা দামের মোটর গাড়ি আছে। স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর মধ্যে বিবাহসূত্রে নিজের নামে রয়েছে ৫০ হাজার টাকা দামের ২০ তোলা স্বর্ণ। স্ত্রীর নামে আছে ৬০ হাজার টাকা দামের ৪০ তোলা স্বর্ণ। বিবাহসূত্রে নিজের নামে ১০ হাজার টাকা দামের ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও এক লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। অন্যান্য অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মূলধন রয়েছে দুই লাখ টাকা ও ফার্মের মূলধন ১০ লাখ ৬ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে অন্যান্য অস্থাবর সম্পত্তি মেসার্স চৌধুরী ইলেকট্রনিক্স দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা, ফার্মের মূলধন দুই লাখ ৫১ হাজার ৫শ টাকা। ব্যাংক ঋণ রয়েছে চার লাখ টাকা।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে কৃষি ও অকৃষি জমি নেই রেজাউল করিম চৌধুরীর। স্ত্রীর নামে দুই গন্ডা দুই কড়া অকৃষি জমি আছে। দালান, আবাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পদের মধ্যে নিজের নামে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ভূমির উপর বাড়ি রয়েছে। যার মূল্য এক লাখ টাকা। যৌথ মালিকানার চার ভাগের এক অংশ থেকে নিজের নামে চারটি এপার্টমেন্ট রয়েছে। যার মূল্য এক কোটি নয় লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকা। নিজের নামে কোন ঋণ ও দেনা নেই।
ডা. শাহাদাত হোসেন : বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাতের বার্ষিক আয় ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৬২৫ টাকা। এরমধ্যে বাড়ি, এপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ নিজের আয় ৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৫ টাকা, পেশাগত আয় ১৭ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা।

গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডা. শাহাদাতের বছরে আয় ছিল প্রায় ১৮ লাখ। এক বছরের তার আয় বাড়লেও সম্পদ কিছুটা কমেছে।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে রয়েছে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৯ হাজার ২২৭ টাকার সম্পদ। এরমধ্যে নিজের নগদ টাকা আছে ১৫ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা রয়েছে ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৭ টাকা। নিজের নামে বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার বাবদ ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৫০ টাকা। নিজের নামে ১১ লাখ ৮০ হাজার মূল্যের কার (ফিল্ডার-টয়োটা) ও ২৭ লাখ ২০ হাজার মূল্যের ভি-৭৩ মডেলের পুরনো জিপগাড়ি আছে। ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের নিজের নামে স্বর্ণালঙ্কার আছে। নিজের ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ফ্রিজ ও ২৫ হাজার টাকার টিভি আছে। ৭৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। অন্যান্য সম্পদের মধ্যে ট্রিটমেন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ব্যবসায়িক মূলধন ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৬শ টাকার সম্পদ আছে।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে ডা. শাহাদাতের নিজ নামে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ আছে।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১৮ শতক এবং ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ১.৫ কাঠা অকৃষি জমি আছে। নিজ নামে ৬৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকার আটতলা বিশিষ্ট একটি দালানের এক অংশ আছে। এছাড়াও ৩৫ লাখ টাকা দামের একটি এপার্টমেন্ট আছে শাহাদাতের।
ব্যাংক ঋণের মধ্যে শাহাদাতের নিজ নামে উত্তরা ফিন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানে ৩ কোটি ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে ২৯ লাখ ৮১ হাজার ১৩২ টাকা ঋণ আছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট