চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ছোটদের বইয়ের কদর বেশি

মরিয়ম জাহান মুন্নি

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

‘হাট্টিমাটিম টিম/তারা মাঠে পাড়ে ডিম/তাদের খাড়া দুটো শিং/তারা হাট্টিমা টিম টিম।’ছোটবেলায় প্রায় মানুষ এমন সব মজার ছড়া পড়ে বড় হয়েছে। এখনো এমন সব ছড়ার আবেদন কিন্তু কমেনি। বর্তমান যুগে এখন আর শুধু ‘হাট্টিমাটিম টিম’ গল্প পড়ে সময় ব্যয় করে না শিশুরা। তারা রাজা-রানী, রাজকন্যার গল্পের পাশাপাশি বিজ্ঞান বিষয়ক গল্প, ফিকশন,

ইনভেস্টিগেটিভ গল্প, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের গল্প, ভূতের গল্প, ঠাকুমার ঝুলি, পরীদের গল্প, গোপাল ভাঁড়, নীতিকথার গল্প, এলিয়েন ও রাক্ষসের গল্প পড়তে ভালোবাসে। বইমেলায় গেলেই দেখা যায় এমন অনেক মজার মজার জানা-অজানা বই কিনতে ব্যস্ত শিশুরা। প্রতিদিনই বাড়ছে ভিড়। জিমনেশিয়াম মাঠে অবস্থিত অমর একুশে বইমেলায় বড়দের পাশাপাশি ছোটদের ভিড়ও লক্ষনীয়। দেখে মনে হয় এ যেন শিশু-কিশোরদের রাজত্ব।
বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা। সারাবছর অনেকেই এ মেলার জন্য অপেক্ষা করে। তাই মেলার এসময় কম বেশি সবাই বই কিনে থাকে। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, বড়দের পাশাপাশি বই কিনতে পিছিয়ে নেই শিশুরাও। বিভিন্ন বয়সী শিশুরা স্টলে ঘুরে-ঘুরে বইয়ের পাতা উল্টে নিজেদের পছন্দের বই খুঁজছে। প্রতিটি দোকানেই বড়দের পাশাপশি শিশুদের বই বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি দোকানে বড়দের বইয়ের পাশাপাশি বিশাল একটি অংশ দখল করে রয়েছে ছোটদের বই। বই মেলার বিক্রিত বইয়ের মধ্যে অর্ধেকেরও বই বিক্রি হয় ছোটদের।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, শিশুদের পছন্দের তালিকায় বেশি স্থান দখল করে আছে মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তার লেখা প্রতিটি বইয়ে শিশুদের আগ্রহ দেখা যায়। তবে শিশুদের আগ্রহের মধ্যে রয়েছেÑ ‘আমার সাইন্টিস মামা’ ও ‘যেরকম টুনটুনি সেরকম ছোটাচ্চু’। অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনীর ‘ঝিলমিল’ শুধুমাত্র ছোটদের বই নিয়ে সেজেছে। এখানে শিশুদের পছন্দের প্রায় সবরকম বই রয়েছে। নগরীর সেন্ট এলিমেন্টরি স্কুল এন্ড কলেজের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তন্ময় মেহরাজকে ‘খুদে বিজ্ঞানীদের স্কুলভিত্তিক বিজ্ঞান প্রজেক্ট’, ‘শায়লার লালফ্রক’, ‘অন্তÍর ভূত দেখা’ বইসহ আরো কিছু গল্পের বই কিনতে দেখা যায়। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, ভূতের গল্প, বিজ্ঞান ভিত্তিক বই ও রাক্ষসের গল্প পড়তে পছন্দ বেশি। মায়ের সাথে একদিন আর আজকে বাবার সাথে এসেছে। সে জানায়Ñ ‘আমার বইমেলায় আসতে ভালো লাগে। সেদিন মা শুধু দুইটি বই কিনে দিয়েছে। আজ বাবা অনেকগুলো বই কিনে দিয়েছে।’ তন্ময় মেহরাজের বাবা আসিফ খন্দকার বলেন, ‘শিশুদের নিয়ে বইমেলায় ঘুরতে আসা প্রতিটি বাবা-মায়ের উচিত। কারণ একটি খেলনা বা দামী পোশাকের চেয়ে শিশুকে একটি বই কিনে দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সে বইটি পুরো না পড়লেও কিছুটা উল্টে পাল্টে দেখে এতেও তাদের জ্ঞান অর্জন হয় আর বই কেনার প্রতি আগ্রহ জন্মায়।’

যেসব বইয়ে শিশুদের আগ্রহ বেশি ততমধ্যে ‘গোপাল ভাঁড়’, ফারজানা পায়েলের ‘আঁকা শিখি রঙ করি’, ‘ছোটোরা যা জানতে চায়’,মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘আমার সাইন্টিস মামা’ ও ‘যেরকম টুনটুনি সেরকম ছোটাচ্চু’ তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরীর ‘অচেনা মহাকাশ’, ‘বরপাখি ও কনেপাখি’, নুরুল মুহাম্মদ কাদেরের ‘বিজ্ঞানের হঠাৎ আবিষ্কার’, আবদুল আজীজ আল আমানের ‘গল্পে গল্পে আলোর নবী আল আমীন’, মিনহাজুল ইসলাম মাসুমের ‘ভূতের কবলে দরবেশ বাবা’, আলী আসকরের ‘এলিয়েন ডাক্তার. ও মির্জা মোহাম্মদ আলীর ‘নাচছে ভ্রমর ফুলে ফুলে।’

‘ঝিলমিল’ স্টলের বিক্রেতা বলেন, ‘বড়দের চেয়ে শিশুদের বই বেশি বিক্রি হয়। কারণ শিশুদের চোখে উপরের রঙ ভালো লাগলেও তারা বই কিনে থাকে। আবার মেয়ে শিশুরা ফুল আঁকা-আঁকির বইসহ অন্যান্য গল্পের বই বেশি কিনে। এক কথায় বড়দের চেয়েও শিশুদের সব রকম বই বেশি বিক্রি হয়।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট