চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

তাসলিমা খানম’র নতুন দুই উপন্যাস প্রকাশিত

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

চলছে অমর একুশে বইমেলা। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ নানা জেলায় বইমেলা চলছে। এরই মধ্যে প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে নিত্যনতুন বই। এবারই বইমেলাকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত হয়েছে তাসলিমা খাতুন’র দুই উপন্যাস। সমগ্র প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে উপন্যাস ‘ছোবল’। এরই মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে উপন্যাসটি। ছোবল মূলত মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। এটি একটি

স্মৃতিচারণমূলক গল্প যেখানে মুক্তিযুদ্ধের খ- খ- ঘটনার মধ্যে দিয়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধকে তুলে ধরা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গল্প, কবিতা, উপন্যাস ইতোপূর্বে কম লেখা হয়নি। তারপরও মহান মুক্তিযুদ্ধের আবেদন কোনোকালে কমতি ছিল না।
‘ছোবল’র গল্প মুক্তিযুদ্ধের সময়কার একটি সত্যিকারের গল্প। তাসলিমা খানম তার বইয়ের মুখবন্ধে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন কেন তিনি এই উপন্যাস লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর স্মৃতি তাকে তাড়িত করেছে লিখতে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেই গল্প লিখে তিনি নিজেকে ঋণমুক্ত করতে চেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে লেখিকা ছিলেন মাতৃজঠরে। কি অপরিসীম শারীরিক-মানসিক যন্ত্রণা ও বেঁচে থাকার অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে তার মা তাকে জন্ম দিয়েছেন তা লেখাতে বর্ণিত হয়েছে। মেলায় সমগ্র প্রকাশন’র স্টলে পাওয়া যাচ্ছে এই উপন্যাস।

লেখিকার আরেকটি উপন্যাস ‘শিশির জলের নোলক’ বাতিঘর প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এই উপন্যাসটি একদিকে যেমন নৈতিক বিশুদ্ধতার মূর্ত প্রতীক অন্যদিকে বর্তমান সমাজের নৈতিক স্খলনের প্রতি প্রচ- ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ। গল্পটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মূলধারা থেকে বিচ্যুতি হয়নি একটুও।
ছেলেবেলায় যেমন আদর্শলিপির শেষ অংশে নৈতিক জ্ঞান অধ্যয়ন করতাম। শিশু বয়সের সেই শিক্ষা ধীরে ধীরে বিবেকের আকারে আতœপ্রকাশ করে আমাদের পরবর্তী জীবনে অর্থাৎ ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত আমাদের সমাজ থেকে নৈতিকতা ও বিবেক আজকাল অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। অন্যায়কেও নানা উপায়ে বৈধ করার প্রক্রিয়া চলছে যা লেখিকাকে দারুণভাবে পীড়িত করেছে।
নৈতিক অবক্ষয় সমাজে বৃহৎ পর্যায়ে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তারই শুধু করে না, একটি পরিবারকেও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়। লেখিকা তার উপন্যাসে রম্যরস ও হালকা মেজাজের উপস্থাপনায় খুব সুন্দরভাবে এই বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন। উপন্যাসে কাহিনীর প্রতিটি চরিত্রকে সমান গুরুত্ব দিয়ে তিনি উপস্থাপন করেছেন।

গল্পের মূল নায়িকা অবন্তিকা যাকে ভালবেসেছে সে পিতার কু-কর্মের জন্য লোকসমাজে ঘৃণিত। অথচ একইসাথে তাকে বিশুদ্ধতার প্রতিক ও বিবেকের ছায়া হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অর্ণব নিজেকে পরিবার সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ঘৃণা আর লজ্জার কালি ছুঁড়ে দিয়েছে অন্যায় ও নীতিহীনতার বিরুদ্ধে। এইদিক থেকে গল্পের নামকরণ সার্থক হয়েছে। নীতি নৈতিকতা বর্জিত সমাজের নানা পদে কোনো না কোনো সমস্যায় জর্জরিত। এসব নিয়ে উপন্যাস ‘শিশির জলের নোলক’। সমাজের নানা অবক্ষয়ের চিত্র এই উপন্যাসে উঠে এসেছে।
এরই মধ্যে উপন্যাস দুটি বেশ সাড়া ফেলেছে পাঠক মহলে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট