চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

লেখকের দৃষ্টিতে বইমেলা

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও কবি। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ৭ এপ্রিল ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে। এই বয়সেও লেখালেখি করে যাচ্ছেন দু’হাতে। কবিতা, গবেষণা ও প্রবন্ধে বেশ কটি বই এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এবারও বইমেলায় চারটি বই প্রকাশ পেয়েছে ততমধ্যে দুটি একেবারেই নতুন। সম্প্রতি পূর্বকোণের পক্ষ হতে লেখকের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। লেখক খুব সুন্দর ভাবে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন। পূর্বকোণের পাঠকদের জন্য

উত্তরগুলো তুলে ধরা হল। বই করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে লেখক বলেন, ‘লেখালেখি হলো গ্রীক পুরাণের সেই গোলক ধাঁধা, যেখানে একজন নিজের অজান্তে ও আনমনে প্রবেশ করে; কিন্তু বাকি জীবনে কখনো বের হতে পারে না। এই গোলকধাঁধায় লেখকের আর্তি জলপ্রপাতের মতো বেজে চলে। এটা এমন এক ধরণের জীবন প্রক্রিয়া, যা একজন লেখক বেছে নেন আর সারাজীবন তাকে শিরোধার্য করে বেঁচে থাকেন। সঙ্গতকারণেই এ তাড়না আমাকে তাড়ায়, নাড়ায়, আমাকে লেখালেখিতে ব্যতিব্যস্ত রাখে। তাই নতুন নতুন বই প্রকাশ করি।’

প্রথম বই প্রকাশ আর বর্তমান বই প্রকাশের অনুভূতি নিয়ে জানান, ‘প্রথম হোক আর শেষ হোক, প্রতিটি বই-ই আমার কাছে সন্তানতুল্য। পাঠক যখন বইগুলো লুফে নেয় তখন বেশ ভালো লাগে এক্ষেত্রে আমি আনন্দিত ও উজ্জীবিত হয়েছি।’
বই বিক্রি নিয়ে লেখক জানান, ‘যেনতেন প্রকারে বই লিখে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের মোহ আমার কোনোকালে ছিলো না, এখনো নেই। আমি যথেষ্ট পড়াশোনা করি। প্রয়োজনে দিন-মাস-বছরও পার করে দেই বই লিখতে। তাছাড়া আমি লেখালেখির ব্যকরণ মেনে চলে তারপরেই কোনো বই লিখতে হাত দেই। এজন্য হতাশা আমাকে ছুঁতে পারে নি।’

বই প্রকাশে কোন বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয় প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বই করার ক্ষেত্রে আমি গতানুগতিকতার বাইরে ভিন্নধর্মী বিষয় বেছে নেই, যা পাঠকেরা মনে মনে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না।’
তরুণ লেখকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা বেশি বেশি পড়ুন। সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের কুহকী পথে পা বাড়াবেন না। মনে রাখবেন, সেই নিভৃতচারী লেখকই মূল্যবান, যার আছে বিস্তৃত ও অন্তগূঢ় লেখক জীবন। সেই লেখকই মূল্যবান যিনি লেখার ভেতর দিয়ে জীবনকে ভ্রমণ করান দুর্গম পথের অভিযাত্রীর মতো।’
নতুন বই প্রসঙ্গে লেখক বলেন, ‘এবারের বইমেলায় আমার ০৪(চার)টি বই বেরিয়েছে। এর মধ্যে নতুন ০২(দুই)টি বই হলো কবিতাগ্রন্থÑ ‘পানপাত্রে দ্রাক্ষারস’ ও প্রবন্ধগ্রন্থÑ ‘অচেনা মহাকাশ ভেতরের কথা’। কবিতায় জীবন, জগৎ, প্রকৃতি, প্রেম-বিরহ বাঙময় হয়েছে। মহাকাশ বিষয়ে গতানুগতিকতার বাইরে ভিন্নধর্মী নতুন বইটি রচনায় আমি বিভিন্ন উচ্চমানের বইপত্র ও আন্তর্জাতিক জার্নালের সহযোগিতা নিয়েছি। এছাড়া ‘ভিনগ্রহের প্রাণী ও মানবজাতি’ (প্রবন্ধ) নামের ‘জনপ্রিয় বিজ্ঞান’ সিরিজের বইটির পঞ্চম মুদ্রণ এবং ‘চট্টগ্রামঃ অতীত ও ঐতিহ্য’ (প্রবন্ধ) বইটির পরিবর্ধিত নতুন সংস্করণ বেরিয়েছে। ’
বইমেলা প্রসঙ্গে জানান, ‘বইমেলার জন্য মেলা কমিটিকে ধন্যবাদার্হ। তবে তুলনামূলক প্রচারণা কিছুটা কম হয়েছে মনে হয়।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট