চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

৬৮ বছরেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাননি ভাষা সৈনিক আবুল কালাম

কে জি ইসলাম হ রাঙ্গুনিয়া

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৭:০৭ অপরাহ্ণ

একুশ আসে, একুশ যায়। ৫২’র ভাষা আন্দোলন অতিক্রম করেছে ৬৮ বছর। বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন ৬৯ তে পা রাখলেও আজো স্বীকৃতি পাননি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ভাষা আন্দোলনের অগ্রনায়ক ভাষা সৈনিক সৈয়দ আবুল কালাম। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিতে রাঙ্গুনিয়ায় প্রথম মিছিল বের হয় উপজেলার মরিয়মনগর

থেকে। আর ভাষা আন্দোলনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ভাষা সৈনিক সৈয়দ আবুল কালাম। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে তাঁর নেতৃত্বে ৭০/৭৫ জন লোকের একটি মিছিল মরিয়মনগর সকালের বাজার থেকে বের হয়ে কাপ্তাই সড়কের চৌমুহনী পৌঁছলে তৎকালীন পাকিস্তানের অনুগতরা রাষ্ট্র ভাষা উর্দু চাই স্লোগান দিয়ে পাল্টা একটি মিছিল নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়।
হামলায় গুরুতর আহত হন ভাষা সৈনিক সৈয়দ আবুল কালাম। তখন তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার খবর পেয়ে বাংলা ভাষা বাস্তবায়নের পক্ষের শতাধিক লোক মরিয়ম নগর, মাইজ পাড়া থেকে নুর জাহান বালিকা বিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সভা করেন। প্রতিবাদ সভায় আহত সৈয়দ আবুল কালামের পিতা মাওলানা সৈয়দ আবদুল হক তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

ভাষা সৈনিক আবুল কালাম চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাম রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ভাষা আন্দোলনের চরম মুহুর্তে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনসভা ও প্রতিবাদ সভায় তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। প্রতিবাদ সভায় বলিষ্ঠ বক্তব্যের কারণে সেসময় ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের নজরে আসেন।

ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে পটিয়া, হাটহাজারী ও চট্টগ্রামের কমিটির সাথে যুক্ত হয়ে আন্দোলনকে বেগবান করে তুলতে ভূমিকা রাখেন সৈয়দ আবুল কালাম। এরই ধারাবাহিকতায় নিজ গ্রাম মরিয়ম নগরেও ভাষা আন্দোলন কমিটি গঠন এবং সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই দাবির আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

তার ছেলে ডা. এম. এ. কাউছার ভাষা সৈনিক হিসেবে সৈয়দ আবুল কালামকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদানের দাবি জানিয়ে বলেন, তার বাবা ভাষা সৈনিক আবুল কালাম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়ম নগর গ্রামে ক্ষণজন্মা বিপ্লবী পুরুষ ছিলেন।

ভাষা সৈনিক মরহুম সৈয়দ আবুল কালাম ১৯৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ চট্টগ্রাম নগরের ডিআইবি অফিসে চাকরির মধ্য দিয়ে তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবন শুরু করেন। কর্ম জীবনে সৎ ও কর্তব্যনিষ্ঠ এই মানুষটি ১৯৮৫ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। ১৯৯২ সালের ১৯ জুন ব্রেইন স্ট্রোকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট