চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আদালতে ৫ খুনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

বাবা হত্যার বদলা নিতে আইয়ুবকে খুন করা হয়

কে জি ইসলাম , রাঙ্গুনিয়া

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৩:৫৩ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে গুলি করে হত্যার মাধ্যমে বাবা হত্যার প্রতিশোধ নেন ১৯৮৭ সালে আইয়ুবের হাতে খুন হওয়া আব্দুস সাত্তার তালুকদারের ছেলে মহসিন ও হাছান। পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর হাতে আটক ভাড়াটে পাঁচ খুনি গত সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল্লাহ কায়সারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম পাঁচ খুনির আদালতে স্বীকারোক্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোজাম্মেল আরমান বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও রাঙামাটির রাজস্থলী এলাকা থেকে আবদুল আজিজ প্রকাশ মানিক (২৪), মো. আজিম (২৪), আব্দুল জলিল (২৯), মো. রুবেল (২৮) ও মো. মহিন উদ্দিন (২৭) কে আটক করা হয়। আইয়ুব হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে বলেন, ১৯৮৭ সালে রাঙ্গুনিয়ায় আব্দুস সাত্তার তালুকদারকে দিনদুপুরে জবাই করে হত্যা করেন আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুব। পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে ৩২ বছর ধরে চেষ্টা করে আসছিলেন নিহত আব্দুস সাত্তার তালুকদারের দুই ছেলে মহসিন এবং হাছান। ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর রাতে সিএনজি অটোরিক্সায় করে উপজেলা সদর থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভাড়াটে খুনি দিয়ে গুলি করে খুন করান পিতার হত্যাকারী আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবকে।

পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, গ্রেপ্তার পাঁচজন হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছে। তারা ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেছে। মহসিন এবং হাছান নামে দুইজন তাদেরকে ভাড়া করেছিলেন আইয়ুবকে হত্যা করার জন্য। আইয়ুব হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তিনি জানান, ১৯৮৭ সালে রাঙ্গুনিয়ায় আব্দুস সাত্তার তালুকদারকে দিনদুপুরে জবাই করে হত্যা করেন আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুব। আব্দুস সাত্তার তালুকদারের ছেলে মহসিন এবং হাছান। তারা দীর্ঘদিন ধরে পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে অপেক্ষায় ছিলেন।
গত বছরের ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয় আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবকে। পরে আইয়ুবের স্ত্রী রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ সাড়ে তিন মাস তদন্ত শেষেও এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় আদালত মামলাটির তদন্ত পিবিআইকে করার আদেশ দেন।

৮০ ও ৯০ দশকে রাঙ্গুনিয়ার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবের বিরুদ্ধে এক ডজনের উপর হত্যা মামলা রয়েছে রাঙ্গুনিয়াসহ বিভিন্ন থানায়। এসব হত্যাকা-ের মধ্যে রয়েছে ১৯৮৫ সালে সাবেক মেজর ওয়াদুদকে হত্যা, ১৯৮৬ সালে মেহেরুজ্জামানকে হত্যা, ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহানকে হত্যা, একই সালে গফুরকে হত্যা, ১৯৯২ সালে নুরুল ইসলাম হত্যা। ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান হত্যাকা-ে আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার সময় আব্দুস সোবহানের দুই ছেলে কবির ও সবুরকে পথে আটক করে খেঁজুর কাঁটা দিয়ে তাদের চোখ উপড়ে ফেলেন আইয়ুব।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট