চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডা. শাহাদাত নাকি বক্কর কার হাতে ধানের শীষ ?

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৭:০৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে ঘিরেই আলোচনা চলছে দলের ভিতরে-বাইরে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তিনিই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন। বিএনপির হাইকমান্ড থেকে তাকে ইতিমধ্যেই ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছে বলেও জানা গেছে। তবে দল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কারও নাম ঘোষণা করেনি। জানা গেছে, গতরাতে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের প্রার্থীদের নাম নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হলেও চুড়ান্ত ঘোষণা আসবে পরে। মেয়র পদে প্রার্থীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন লন্ডনে অবস্থান করা দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এদিকে, গতকাল ৩টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এ তিনটি আসন হচ্ছে, ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪ ও গাইবান্ধা-৩ আসনে। এ সব আসনের মধ্যে ঢাকা-১০ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন শেখ রবিউল আলম, বাগেরহাট-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন কাজি খায়রুজ্জামান শিপন এবং গাইবান্ধা-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন অধ্যাপক ডা. মাইনুল হাসান সাদিক। গতরাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনেতিক দপ্তরে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকে প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠক শেষে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ইতিমধ্যে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী আগামী ২৯ মার্চ ভোটের দিন ঠিক করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে চট্টগ্রাম বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা রয়েছে। যে কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা দেখা গেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাদের এমন দোটানার মধ্যেই কিছুদিন আগে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়ে দিয়েছেন, বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেবে। ফলে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে যে দলটি অংশ নিচ্ছে, এটা প্রায় নিশ্চিত।

মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকা একেবারে ছোট। নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর দলের মনোনয়ন চান। নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ানের নাম আলোচনায় থাকলেও নির্বাচনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তিনি। চট্টগ্রাম-৮ আসনের নির্বাচন ও পরবর্তী অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে হেরে যাওয়ায় হতাশায় ভুগছেন তিনি। এর বাইরে আলোচনায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদউল্লাহ ও সহসভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খানও। অবশ্য বড় কোনো ‘অঘটন’ না ঘটলে ডা. শাহাদাতের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

চট্টগ্রাম বিএনপির এক নেতা জানান, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ডা. শাহাদাত হোসেনেই যোগ্য। তার ক্লিন ইমেজ ও সততা রয়েছে। নেতা-কর্মীদের সুখ-দুঃখে তিনি পাশে রয়েছেন। তাই ডা. শাহাদাতই প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি মেয়র পদে ধানের শীষের প্রতীক পাবেন বলে তারা মনে করছেন।

গত ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন ডা. শাহাদাত। কারাগারে থেকেই নির্বাচন করেন তিনি। সেই নির্বাচনে বিপুল ভোটে হেরে যান বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে। অন্যদিকে, জাতীয় কিংবা স্থানীয় কোনও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। এবার সেই সুযোগ নিতে জোরেশোরেই মাঠে নেমেছেন তিনি।

বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়র পদ ছাড়াও ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দেবে বিএনপি। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে দলটি। দলের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরির কাজও চলছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট