চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৬ বছর পরও চালু হচ্ছে না নিউমার্কেট বি-ব্লক

অভিযোগ নির্মাণ ক্রটি ও সঠিক পরিকল্পনার অভাব ৭ কোটি টাকা মূল্যের ৩৮টি দোকান অবিক্রিত ‘এ-ব্লকের ব্যবসায়ীরা এই মার্কেট চালু করতে দিচ্ছে না’

ইমরান বিন ছবুর

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ

প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করে নিউমার্কেট বা বিপণী বিতান বি-ব্লক। নির্মাণ ক্রটি ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে নির্মাণের ৬ বছর পরও মার্কেটটি চালু হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিপণী বিতান মার্চেন্টস্ ওয়েলফেয়ার কমিটির নেতাদের। ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কেটটি উদ্বোধন করলেও ২০১৪ সালে সিডিএ দোকান মালিকদের দোকান বুঝিয়ে দেয়। তবে প্রকল্পের সাবেক পিডি বলেন, নিউ মার্কেট বা বিপণী বিতান এ-ব্লকের ব্যবসায়ীরা এই মার্কেট চালু করতে দিচ্ছে না।

সিডিএ সূত্র জানায়, এই মার্কেটে প্রায় সাড়ে ৪০০ দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। ১০ তলা এই মার্কেটের নিচ তলা ও দ্বিতীয় তলার প্রতি স্কয়ার ফিট বিক্রি করা হয় সর্বনি¤œ ১৫ হাজার টাকায়। ক্রমান্বয়ে তৃতীয় তলা ১৪ হাজার, ৪র্থ তলা ১৩ হাজার, ৫ম ও ষষ্ঠ তলা ১২ হাজার, ৭ম ও ৮ম তলা ১০ হাজার টাকায় প্রতি স্কয়ার ফিট বিক্রি করা হয়। এছাড়া, ৯ম ও ১০ তলার দোকান ভাড়া দেয়া হয়। ৪৫০টি দোকানের মধ্যে এখনো ৩৮টি দোকান বিক্রি হয়নি। অবিক্রিত এসব দোকানের মূল্য প্রায় সাত কোটি টাকা।

গতকাল (রবিবার) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাইরে থেকে দেখে বুঝার উপায় নেই এটি একটি মার্কেট। ঢুকার সময় মার্কেটের কোন নাম বা গেট নেই। শুধুমাত্র দোতলায় কিছু দোকান ছাড়া বাকি সব দোকান বন্ধ দেখা যায়। এসময় দোকানদারদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, এখানে যে একটি এত বড় মার্কেট আছে, তা বাইরে থেকে দেখে বুঝার কোন উপায় নেই। এখানে নেই কোন লাইটিং এর ব্যবস্থা। বর্ষাকালে পাহাড় থেকে পানি নেমে দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। দোকান যেহেতু চালু করেছি, তাই কোন রকমে আছি। খুব একটা বেচাকেনাও নেই। বিপণী বিতান মার্চেন্টস্ ওয়েলফেয়ার কমিটির নেতারা অভিযোগ করেন, নির্মাণ ক্রটি, বারবার মার্কেটের ডিজাইন পরিবর্তন ও চুক্তি অনুযায়ী দোকান বরাদ্দ না দেয়া এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাবে মার্কেটটি এখনো চালু হয়নি। ব্যসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হলেও কোন কাজ করেনি কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে বিপণী বিতান মার্চেন্টস্ ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি জানান, ২০০৫ সালে আমাদের সাথে সিডিএ’র চুক্তি হয়। তারা আমাদের ৪ বছর পর দোকান বুঝিয়ে দিবে বলে, সেই দোকান বুঝিয়ে দেয় ২০১৪ সালে। সিডিএ অধিকাংশ দোকান বিক্রি করেছে প্রবাসীদের কাছে। ফলে তারা দোকান চালু করতে পারেনি।

তিনি আরো বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে কোন স্থাপনা নির্মাণ করলে সেখানে রিটেইনিং ওয়াল দেয়ার কথা থাকলেও সিডিএ তা করেনি। ফলে বর্ষাকালে দোতলার অনেক দোকানে পানি ঢুকে ব্যবসায়ীদের মালামাল নষ্ট হয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না থাকায় স্কেলেটরসহ মার্কেটের অনেক দামি দামি জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সামনের দোকানগুলো বন্ধ থাকায়, সবাই মনে করে মার্কেটটি এখনো চালু হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এত বড় একটি মার্কেটের সামনে কোন গেট বা নাম নেই। মানুষ জানেও না যে এখানে এত বড় একটা মার্কেট আছে। মার্কেট নির্মাণে যে সব মালামাল ব্যবহৃত হয়েছে, তা খুব নি¤œমানের। এক জায়গায় দোকান বরাদ্দ দেয়ার কথা বলে অন্য জায়গায় বরাদ্দ দিয়েছে। দোকান মালিকদের সাথে কোন প্রকার আলাপ ছাড়াই ডিজাইন ও সাইজ পরিবর্তন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রকল্পের সাবেক পরিচালক আহমদ মঈনুদ্দিন জানান, আমি মার্কেটটির দায়িত্ব পাই ২০০৯ সালে এবং ২০১৪ সালে মার্কেটের নির্মাণ কাজ শেষ করি। দোকান চালু না হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যদি দোকান চালু না করে আমাদের তো কিছু করার নেই। কি কারণে ব্যবসায়ীরা দোকান চালু করছে না, সেটা তারাই ভালো জানে। নির্মাণ ক্রটির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্মাণে কোন ক্রটি হয়নি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট