চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাউন্সিলর প্রার্থী বাছাই করছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী

চসিক নির্বাচন

ইফতেখারুল ইসলাম

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

কাউন্সিলর প্রার্থীরা চরম উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন। আগামি বুধবার বিকাল ৫টায় উৎকণ্ঠার অবসান হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও ৪১টি ওয়ার্ড এবং ১৪টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নগরীর ওয়ার্ডপিতা হওয়ার দৌড়ে সামিল হয়েছেন ৪০৬ জন। অর্থাৎ একেকটি ওয়ার্ডে গড়ে প্রায় ১০ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে অনেক চিহ্নিত চাঁদাবাজ এবং ভূমিদস্যুও আছেন। যাদের সাংগঠনিক বায়োডাটা ভাল। কিন্তু বাস্তবে জনপ্রিয় নন। আবার অনেক জনপ্রিয় ব্যক্তি আছেন যাদের দলীয় সাংগঠনিক বায়োডাটা তত সমৃদ্ধ নয়।

কোন কোন সম্ভাব্য প্রার্থীর আশঙ্কা, এবার যেহেতু কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সরাসরি নির্ধারণ করে দিচ্ছে এই সুযোগে

অনেক চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যুও দলীয় সমর্থন পেয়ে যেতে পারেন। তাদের আশঙ্কার কারণ হল, ওয়ার্ড অর্থাৎ তৃণমূল পর্যায়ে কোন প্রার্থীর কেমন অবস্থান তা কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্তদের যথাযথ ধারণা নাও থাকতে পারে। ৫নং মোহরা ওয়ার্ডের নেতা আমিনুল ইসলাম পূর্বকোণকে জানান, তার ওয়ার্ডের এক নেতা যিনি কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় চাঁদাবাজি করেন। এই নেতা যদি কোনরকমে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে যান তাহলে সাধারণ মানুষের উপর চাঁদার হার আরো বেড়ে যাবে। বাড়বে জনদুর্ভোগ।
তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া পূর্বকোণকে জানান, আগামী ১৯ তারিখ বিকাল ৫টায় কাউন্সিলরদের নাম ঘোষণা করা হবে। কোন চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবে না।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, কাউন্সিলরদের দলীয় সমর্থনের বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তদারক করছেন। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন, প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সোর্সের প্রতিবেদন এবং চট্টগ্রামের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থীরাই আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী পূর্বকোণকে জানান, তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন রাজনীতিক হয়েও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তার নাম ছিল না। বিষয়টি জেনে তিনি দুঃখ পেয়েছেন। পরে তাদেরকে অনুরোধ করে তার নাম তালিকায় তুলেছেন। তাই গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে নির্ভুল বলা যাচ্ছে না। অপরদিকে, রাজনৈতিক প্রতিবেদনের ক্ষেত্রেও যে প্রার্থী যে নেতার অনুসারী সেই নেতা তার পক্ষেই প্রতিবেদন দেবেন। এখানেও নিরপেক্ষতার সুযোগ খুবই কম। যদি স্থানীয় পর্যায়ে অর্থাৎ মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং সাংসদদের পরামর্শ নিয়ে কাউন্সিলরদের সমর্থন দেয়া হলে অগ্রহণযোগ্যরা সুযোগ পেত না।

৮নং শুলকবহর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও আসন্ন চসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. মোরশেদ আলম পূর্বকোণকে বলেন, গত পাঁচ বছর জনগণের সাথে থেকেছি। বিতর্কিত কোন কাজে কখনোই জড়াননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণই তার মূল্যায়ন করবে।
এ ওয়ার্ড থেকে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান তারেক বলেন, প্রত্যেক রাজনীতিকের একটি আশা থাকে। তা হল পদে থেকে জনসেবা করা। কারণ পদে থাকলে জনসেবার সুযোগ অনেক বেড়ে যায়। তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই সাবেক নেতা বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।

৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ও নগর যুবলীগ নেতা নেছার আহমদ পূর্বকোণকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তিনি চান পরিচ্ছন্ন রাজনীতিকরাই জনসেবা করুক। তাই তিনিও কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। দল যদি মনোনয়ন দেয়, তাহলে জয়ের ব্যাপারে তার আত্মবিশ^াস আছে। যদি দলীয় মনোনয়ন না পান তাহলে দল থেকে যাকে দেয়া হবে তার পক্ষে তিনি কাজ করবেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট