চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

দিনভর আলোচনায় রেজাউল-নাছির

চসিক নির্বাচন টক অব দ্য টাউন

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

বন্দর নগরীতে গতকাল (রবিবার) টক অব দ্য টাউন ছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে নিয়ে। চায়ের দোকানের আড্ডা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, সিটি বাস, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সর্বত্রই আলোচনার বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রীর চমক। কারণ রেজাউল করিম চৌধুরী মনোনয়ন ফরম জমা দিলেও মেয়র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন। তার প্রচারণা তেমন ছিল না বললেই চলে। একই সাথে আলোচনায় উঠে আসে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও কেন পেলেন না। কিংবা আওয়ামী লীগের আরো অনেক শক্তিমান প্রার্থী ছিলেন তারাওতো মনোনয়ন পেতে পারতেন। কেন পেলেন না। এসব নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ।

বিভিন্ন অঙ্গণে মূলত প্রার্থী নিয়েই আলোচনাটা হচ্ছে। তিনি ভোট পাবেন কিনা? কিংবা ভোটারদের মন জয় করতে পারবেন কিনা ওই বিষয় নিয়ে কথা বার্তা নেই বললেই চলে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী সেই ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকলেও অতীতে কখনো কোথাও প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করেননি। তাই তার সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। তাকে নিয়ে কোন নেতিবাচক আলোচনা নেই। সেই আলোচনায় কেউ যাচ্ছেও না। তবে অনেকেই প্রশ্ন রাখছেন, তিনি যদি ভোটে নির্বাচিত হন তাহলে হঠাৎ করে অনেক বড় দায়িত্ব তার কাঁধে বর্তাবে। সেই দায়িত্ব পালনে তিনি কতটুকু সফল হবেন।

গত পাঁচ বছর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মেয়রের দায়িত্ব পালন করা আ জ ম নাছির উদ্দীনের দুর্বলতা কোথায় ছিল, তিনি কেন মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌঁড়ে পিছিয়ে পড়েছেন এ নিয়ে চলছে বিচার-বিশ্লেষণ। কেউ কেউ বলছেন, সেই ৫% এর আলোচনা থেকেই ঢাকার সাথে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়েছে আ জ ম নাছিরের সাথে। এরপর চট্টগ্রামের নেতাদের সাথে একের পর এক বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে তার। জাতিসংঘ পার্ক নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি’র সাথে যে ঝগড়া শুরু হয়, তা আর থামেনি। শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ পার্কটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সিটি মেয়রের শুভাকাক্সক্ষীদের অনেকেই মনে করেন এই পার্ক নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের সাথে বিরোধে জড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নাছির। এছাড়া বন্দর আসনের সাংসদ এম এ লতিফ এবং পটিয়ার সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর সাথে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কও শেষ পর্যন্ত টিকেনি।

অপরদিকে, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সাথেও সম্পর্কের উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। দিন যত গড়িয়েছে বন্ধুর সংখ্যা কমেছে। অপরদিকে বিরোধীতাকারির সংখ্যা বেড়েছে। বিরোধের কারণে সবদিক থেকেই ঢাকায় নেতিবাচক বার্তা বেশি গেছে। এছাড়া কর্ণফুলী নদী ভরাট করে ফিশারিঘাট নির্মাণকারীদের পক্ষ নিয়েও সমালোচিত হয়েছেন মেয়র নাছির। আর সৌন্দর্যবর্ধনের নামে বিভিন্ন পার্কে, ফুটপাতে দোকান নির্মাণের ঘটনা নগরবাসীর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আবার কেউ কেউ সিটি মেয়রের ভাল কাজগুলোর কথাও তুলে ধরেছেন। শহরের এমন কোন ওয়ার্ডের অলি-গলি নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এই কথাগুলোও বলছে সাধারণ মানুষ। আলোচনায় উঠে আসছে, আ জ ম নাছিরের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস। রাজনীতির কঠিন সময় পার করে এসে ৬০ বছর বয়সে দলীয় পদ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে তার ধৈর্য্যরে বিষয়টিও বলছেন অনেকেই। তবে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের অভিমত রেজাউল করিম ক্লিন ইমেজের একজন রাজনীতিবিদ এবং দলে তাঁর সাথে কারো কোন বিরোধও নেই। মেয়র পদে তাঁর মনোয়ন পাওয়ার নেপথ্যে এটাই প্রধান কারণ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট