চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

কাজুবাদামে বিস্মিত কৃষিমন্ত্রী

পতেঙ্গায় দেশের প্রথম সমন্বিত কারখানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের পতেঙ্গার ডেইলপাড়ায় গতকাল (রবিবার) দুপুরে দেশের প্রথম কাজুবাদামের সমন্বিত কারখানা সরেজমিন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। কারখানায় কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত করার পদ্ধতি দেখার পর তিনি বলেছেন, ‘খুবই ভালো উদ্যোগ। আমার খুব ভালো লেগেছে। মন প্রাণ জুড়িয়ে গেছে। মুগ্ধ হওয়ার মতো, চমৎকৃত হওয়ার মতো উদ্যোগ। কৃষি খাতের উন্নয়নে আমার এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে’। গতকাল সকালে কৃষিমন্ত্রী চট্টগ্রাম সফরে এসে ‘গ্রিনগ্রেইন কেশিও প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি’নামের কারখানায় যান। শুরুতে মন্ত্রী কারখানার চত্বরের একপাশে কাজুবাদাম গাছের চারা রোপণ করেন। এরপর কারখানায় কাঁচা কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত করে খাওয়ার উপযোগী বাদাম প্রস্তুত করার উৎপাদন প্রক্রিয়া ঘুরে দেখেন। পরে অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মেহেদী মাসুদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। কৃষি মন্ত্রী বক্তৃতায় বলেন, তরুণদের চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি লক্ষ্য তরুণ সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করা। তরুণ উদ্যোক্তা শাকিল প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান বাস্তাবায়ন করে দেখিয়ে দিয়েছে। এ রকম তরুণদের সুযোগ দেওয়া হলে হাজারো শাকিল উদ্যোক্তা হয়ে আসবে। কৃষিমন্ত্রী হিসেবে আমার সার্থকতা হবে তখনই। কারখানায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তরুণ উদ্যোক্তা শাকিল আহমেদ ‘আমাদের কাজু বাদামের গল্প’ শীর্ষক উপস্থাপনা করেন। দশ বছর আগে ২০১০ সালে পাহাড়ের কাঁচা কাজুবাদাম রপ্তানি থেকে শুরু করে কারখানা

নির্মাণ করে দেশীয় কাজুবাদামের সাফল্যের কাহিনি শোনান তিনি। এই গল্পে যেমন হোঁচট খাওয়ার কথা ছিল, নানা প্রতিবন্ধকতার কথা ছিল, তেমনি ছিল সাফল্যের কথাও। কৃষি খাতের এমন অপ্রচলিত পণ্যের বাণিজ্যিক উন্নয়নের গল্প শোনে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, ‘এই গল্প ফিনিক্স পাখির মতো উত্থান। যেখান থেকে এই কারখানা হলো তা আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। সরকারি পদ্ধতিতে এমন কিছু ত্রুটি আছে যা আমরা এড়াতে পারিনা। তবে দশ বছর লাগলেও এই উদ্যোক্তা পরীক্ষিত কষ্টি পাথরে যাচাই করা উদ্যোক্তা। এ রকম যদি পাঁচজন উদ্যোক্তা থাকে তাহলে বাংলাদেশের কাজুবাদাম শিল্প পৃথিবীর অন্যতম কাজুবাদাম শিল্পে পরিণত হবে’। এই খাতের উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনে শুল্কহার কমানোসহ নানা সরকারি নীতিসহায়তার ক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।

উদ্যোক্তা শাকিল আহমেদ বলেন, ২০১০ সালে পাহাড়ি এলাকার উৎপাদিত ৩০ টন কাজুবাদাম তিনি ভারতে রপ্তানি করেন। বাংলাদেশ থেকে সেটিই ছিল কাঁচা কাজুবাদাম রপ্তানির প্রথম চালান। এরপর ২০১৬ সালে দেশের প্রথম কাজুবাদাম প্রস্তুতকরণের সমন্বিত কারখানা দেন তিনি। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এখন কারখানায় প্রক্রিয়াজাত কাজুবাদাম বিশ্ববাজারে রপ্তানির প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠান শেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাড়ে তিন হাজার কেজি কাজুবাদাম রপ্তানির চুক্তিপত্র কৃষিমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন উদ্যোক্তা শাকিল আহমেদ। একইসঙ্গে ১০ কেজির একটি নমুনাও মন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়ে দেশের প্রথম প্রক্রিয়াজাত কাজুবাদাম রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট