চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আদালতে সোপর্দ সেন্টমার্টিনে ট্রলার ডুবির ঘটনায় আটক ৮ দালালকে

নিজস্ব সংবাদদাতা হ টেকনাফ

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ২:৩০ পূর্বাহ্ণ

সেন্টমার্টিনের সন্নিকটে মালয়েশিয়াগামী ট্রলার ডুবির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আটককৃত ৮ জন দালালকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে টেকনাফ বিসিজি স্টেশন কোস্টগার্ড কন্টিজেন্ট কমান্ডার এসএম ইসলাম বাদি হয়ে ১৫ জন মৃতদেহ এবং পৃথকভাবে জীবিত ৭৩ জন উদ্ধারের ঘটনায় বাহারছড়া নোয়াখালী পাড়ার হাসান আলীর পুত্র ছৈয়দ আলমকে (২৭) প্রধান আসামি করে ১৯ জনকে এজাহার নামীয় আসামি এবং ৬/৭ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে উদ্ধারস্থল হতে আটক মানব পাচারকারী দালাল কুতুপালং ক্যাম্প সি-৩ এর বাসিন্দা আব্দুস সালামের পুত্র আজিজ (৩০), বালুখালী বি-৩ ক্যাম্পের বাসিন্দা কবির হোসেনের পুত্র ওসমান (১৭), নোয়াখালীয়াপাড়ার হাসান আলীর পুত্র ছৈয়দ আলম (২৭) এবং ফয়েজ আহমদের পুত্র সাইফুলকে আটক করে। এছাড়া বিশেষ অভিযানে আটক নোয়াখালীয়াপাড়ার মাঝি

ফয়েজ আহমদ (৪৮), হুমায়ুন কবির (২০), মোহাম্মদ করিম (৪৯), জুম্মাপাড়ার সাদ্দাম হোসেন (২০) ও মোহাম্মদ রফিককে (২৬) একই মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

টেকনাফ বিসিজি স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মো. সোহেল রানা জানান, ১২ ফেব্রুয়ারি বিকাল পর্যন্ত মুমূর্ষ অবস্থায় মো. আব্দুল্লাহ নামে এক যুবকসহ বঙ্গোপসাগরে জল ও আকাশ পথে অভিযানে মৃত ১৫ জন এবং জীবিত ৭৩ জন উদ্ধার করা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সেন্টমার্টিনের সন্নিকটে মালয়েশিয়াগামী ট্রলার ডুবির ঘটনায় ২৮ ঘণ্টা পর ১২ ফেব্রুয়ারি গুরুতর অবস্থায় আবদুল্লাহ (৩৫) নামে আরও এক রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করে কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এ নিয়ে সর্বমোট ৭৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হল। এ ঘটনায় এখনও অর্ধ শতাধিক নিখোঁজ রয়েছেন। অপরদিকে মালয়েশিয়াগামী ট্রলার ডুবির ঘটনায় ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা রুজু করেছে।

সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. নাঈম-উল হক বলেন, ‘মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারী ট্রলার ডুবির ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ পর্যন্ত মোট জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৩ জনকে। আরও অনেক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ছেঁড়াদ্বীপের কাছে মঙ্গলবার ভোরে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নিহতদের মধ্যে চারজন শিশু, ১২ নারী। উদ্ধারকৃত জীবিতদের মধ্যে ২৬ পুরুষ, বাকিরা নারী ও তিন শিশু। হতাহতদের সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক। উদ্ধারকৃত এসব রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষেরা উখিয়া-টেকনাফের কুতুপালং, বালুখালী, শামলাপুর, জাদিমোরা, নয়াপাড়া ও লেদাসহ বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা। তারা দালালদের মাধ্যমে অবৈধভাবে সাগর দিয়ে মালয়েশিয়া পাড়ি দিচ্ছিল। মঙ্গলবার ভোরে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য তারা ট্রলারে সাগরপথে যাত্রা শুরু করে। ট্রলারটি ছেঁড়াদ্বীপের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। ভোর পৌনে ৬টার দিকে ট্রলারটি সাগরে ডুবতে শুরু করলে কোস্টগার্ডকে খবর দেয়া হয়। ৩টি স্টেশন থেকে কোস্টগার্ড সদস্যরা গিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তাদের সঙ্গে অভিযানে যোগ দেয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজ। উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা বেশ কিছু দালালের বিষয়ে জানতে পেরেছি। তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। জীবিতদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে’।

এদিকে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার উপকুলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়ায় একাধিক শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। এদের নেতৃত্বে রয়েছে শীলখালী গ্রামের সাবের আহমদ, হলবনিয়া গ্রামের মোস্তাক আহমদ, মারিশবনিয়া গ্রামের সাইফুল্লাহ, বড়ডেইল গ্রামের সলিম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট