চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে সন্দ্বীপ

ভূমি বন্দোবস্তি প্রদানের অনুমতি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ

অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে সন্দ্বীপে। ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে (বেজা) ভূমি বন্দোবস্তি প্রদানের অনুমতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রশাসনিক অনুমোদনের পর অর্থনৈতিক অঞ্চলের পথ অনেকটা সুগম হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভূমি বন্দোবস্তি প্রদানের প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরইপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক-১ মো. জিয়াউল হক। চিঠিতে সন্দ্বীপের ৬টি মৌজার ১৩ হাজার দশমিক ৪২৬৪ একর খাস জমি বিনা সেলামি বা প্রতীকী মূল্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তির প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রশাসনিক অনুমোদনের পর ভূমি বন্দোবস্তি প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসককে চিঠি দেবে বেজা। এরপর সন্দ্বীপ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাদ্দ প্রদানের প্রক্রিয়া ও মতামত-সুপারিশের পর ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনার পর বেজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমি বন্দোবস্তি দেবে জেলা প্রশাসক। দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে প্রায় ১৪ হাজার একর জমির উপর অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপ-সচিব ও বেজা’র ব্যবস্থাপক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) আবু হেনা মো. মোস্তাফা কালামের এক চিঠিতে দেখা যায়, সন্দ্বীপের ৬টি মৌজায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে বেজা। ৬টি মৌজার ১৩ হাজার ৯১৩ একর সরকার খাস জমি বিনা সেলামি বা প্রতীকী মূল্যে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তি দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন, সন্দ্বীপ উপজেলা ও ভূমি প্রশাসন থেকে সার্ভে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

উপজেলা ভূমি অফিস ও বেজা সূত্র জানায়, সন্দ্বীপের বাথানচর, চিরিঙ্গা, কাঁকরার চর, বোয়ালিয়া, বগারচর ও চর কাউনিয়া মৌজায় অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের চিঠিতে দেখা যায়, সন্দ্বীপ উপজেলার বাথানবাড়িতে ২২৫৪ দশমিক ৩১৫৬ একর, চিরিঙ্গায় ২২৪০ দশমিক ৬১৬২ একর, কাঁকরার চরে ২১৭৫ দশমিক ৩৯৪৪ একর, বোয়ালিয়ায় ২১৭৪ দশমিক ৯৮৬ একর, বাগারচরে ২০৪৮ দশমিক ৭০০৭ একর, চর কাউনিয়ায় ২১০৬ দশমিক ৪১৩৫ একর অর্থাৎ ১৩ হাজার দশমিক ৪২৬৪ একর জায়গা বেজাকে বন্দোবস্তি প্রদানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদশী সম্বৌধি চাকমা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মামুনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১ নং খাস খতিয়ানের ৬ মৌজা এলাকায় ১৩,৯৫৭ দশমিক ৪৮৯৪ একর জায়গা রয়েছে। এরমধ্যে নদী ও খাল শ্রেণি ৯৫৭ দশমিক ৬৩ একর। অবশিষ্ট ১৩ হাজার ৪২৬৪ একর হচ্ছে চরভূমি। নদী ও খাল শ্রেণি ছাড়া ১৩ হাজার ৯১৩ একর জমি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তি প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্দ্বীপ উপজেলার মূল ভূ-খ- থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে বেজা। সন্দ্বীপের উত্তর ও পশ্চিমের মেঘনা ও বামনী নদীর মোহনায় অবস্থিত জাহাজ্জার চর নামে চরভূমিতে অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই চরে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প এবং গবাদিপশু পালন ও চাষাবাদের জন্য সীমিত সংখ্যক মানুষের বসবাস রয়েছে।
দেখা যায়, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন এই বিষয়ে বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যানের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, সন্দ্বীপ উপজেলার ৬টি মৌজা বাথানবাড়ি, চিরিঙ্গা, কাঁকরার চর, বোয়ালিয়া, বাগারচর, চর কাউনিয়া এলাকায় সরকারি ১৩ হাজার ৯১৩ একর খাস জমি বিনা সেলামি বা প্রতীকী মূল্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তি দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। মৌজাগুলোর জমির মালিকানা, স্কেচম্যাপ ও দাগ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রেরণের জন্য বেজা’র কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট