চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঠিক জুমার নামাজের সময় হামলা ভাংচুর শুলকবহরের এক বাড়িতে

পরিকল্পিত দাবি গৃহকর্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

‘ঘরের বাইরে ভাংচুরের শব্দ। জানালার কাচ ভেঙে পড়ছে, তা ভেতর থেকেই বোঝা যাচ্ছে। বুঝতে বাকি ছিল না আমাদের ঘরের জানালাগুলো ভাঙা হচ্ছে। হঠাৎ করেই ২০/২৫ জনের একটি গ্রুপ দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। ঘরের ভেতর যা ছিল তাও তারা ভেঙে ফেলে। তাদের বারবার অনুরোধ করার পরও, শুধু সরে যান সরে যান বলে চিৎকার করে ভাঙতে থাকে তারা’। নিজ ঘরে দুর্বৃত্তদের চালানো হামলার বর্ণনা জানান নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর ভরাপুকুর এলাকার চেয়াম্যান বাড়ির বাসিন্দা সেলিনা নেওয়াজ।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে ওই বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা বাড়ির দুটি ঘরের জানালাসহ ঘরের বাইরে ও ভেতরের বিভিন্ন আসবাবপত্রও ভাংচুর করে। ভাংচুর চালায় বাড়িতে থাকা দুটি গাড়িতেও।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুলকবহর ডেকোরেটার্স কলোনিতে অগ্নিকা-ের ঘটনার রেশ ধরেই চেয়াম্যান বাড়িতে হামলা চালানো হয়। মূলত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই বার অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এর ক্ষোভেই বস্তির কিছু বাসিন্দা এ হামলা চালায়। মূলত বস্তির আগুনের ঘটনায় ভূমির মালিকদের দায়ী করেই এ হামলা চালানো হয় বলেও জানান স্থানীয়রা।

তবে এ ভাংচুরের ঘটনাকে প্রভাবশালীর ইন্ধন দাবি করে বাড়ির কর্তা শাহনেওয়াজ বাবু পূর্বকোণকে বলেন, ‘অগ্নিকা-কে পুঁজি করে একটি মহল এই হামলা চালিয়েছে। যারা ভূমি দখলে নিতেই অগ্নিকা-ের নাটকও সাজিয়েছে। আর আগুনকে ইস্যু করেই আজ আমাদের বাড়িতে হামলা চালায় তারা। এখানে কয়েকজন বস্তির বাসিন্দা হলেও বেশিরভাগই বাইরের ছেলে ছিল। এটা পূর্বপরিকল্পিত হামলা। যখন বাড়িতে পুরুষ কেউই ছিল না, ঠিক ওই সময়কে তারা বেছে নিয়েছে। কারা এ হামলার সাথে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। আর আগুনও কারা লাগিয়েছে তাও তদন্ত করে দেখা হোক।
সরেজমিনে দেখা যায়, চেয়াম্যান বাড়ির প্রবেশ মুখেই সেলিনা নেওয়াজের ঘর। ঘরের চারদিকে থাকা জানালার কাচ ভেঙে পড়ে আছে। ভেতরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্রও ভাঙা অবস্থায় চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পুরো ঘরেই ভাঙা গ্লাসের টুকরো ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। একই চিত্র ছিল পাশে থাকার শাহনেওয়াজ বাবুর ঘরেও। সেখানেও জানালার কাচসহ আসবাবপত্র ভেঙে চুরমার হয়ে পড়ে ছিল।

সেলিনা নেওয়াজ পূর্বকোণকে আরও বলেন, ‘ঘড়ির কাঁটা তখন আনুমানিক দেড়টা। হঠাৎ করেই ৪০/৫০ জনের একটি গ্রুপ এসে এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঁটা দিয়ে ঘরে ভাংচুর করে। বাড়িতে পুরুষ সদস্য কেউই ছিলনা। সবাই নামাজে ছিল। ঘরে আমি আর ছেলে বৌ এবং তাদের দুই সন্তান ছিলাম। তারা সবাই এসে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে’।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক পূর্বকোণকে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে আমাদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজও আমরা দেখছি। যারা এ হামলার সাথে জড়িত আছে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট