চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিকেলে জমজমাট জাম্বুরি পার্ক ও বায়েজিদ সবুজ উদ্যান

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২৫ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ

অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা। ৫শ ওয়াট এলইডির আলো। দুই আলোর অপূর্ব মিলন। এরইমধ্যে লাল, নীল, সবুজ আর সোনালী রঙের আলোয় বর্ণিল হয়ে উঠেছে দুটি ফোয়ারাও। হাওয়ায় শীতের অনুভূিত। বিকেল গড়াতেই শরীরচর্চা, অবসরে ঘুরাঘুরি আর শিশুদের বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে নগরীর জাম্বুরি পার্ক ও বায়েজিদ সবুজ উদ্যান। সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুদের মিলনমেলায় পরিণত হয় এ দুইটি পার্ক। আড্ডা আর গল্পে কেটে যায় বিকেলের সময়। চার দেয়ালে থাকা আর কর্মব্যস্ত মানুষদের জন্য এমন উন্মুক্ত আর খোলামেলা পরিবেশ যেন প্রশান্তি বয়ে আনে। দুইটি পার্কই নজর কাড়ে সবার। এমন পরিবেশে শিশুরা দোলনায় দুলে খেলা করছে। বয়স্ক নারী-পুরুষ ও তরুণ বয়সের ছেলেমেয়েরা দলে দলে হাঁটছে। কেউবা বসে গল্প করছে। পার্ক জুড়ে খেলা করে নানারকম আলো। যা মুগ্ধ করে সবাইকে। প্রতিদিনই নগরীর এ দুইটি পার্ক লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকে। দুটি পার্কই গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নির্মাণ করেছে। কিন্তু বায়েজিদ সবুজ উদ্যানটি সব সময় উন্মুক্ত না থাকলেও আগ্রাবাদ

জাম্বুরি পার্কটি সব সময় সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে। সরেজমিনে দেখা যায়, বায়েজিদ সবুজ উদ্যান সুন্দর ও শৃঙ্খল পরিবেশ থাকলেও জাম্বুরি পার্কের পরিবেশ কিছুটা ময়লাযুক্ত। যেখাসে সেখানে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা।

বায়েজিদ সবুজ উদ্যান ঘুরে দেখা যায়, এখানে রয়েছে ২টি প্রবেশ পথ। পার্কটির ভেতর ৬০ ফুট ব্যাসের একটি জলাধার। এর দুই পাশে আছে একটি উন্মুক্ত গ্যালারি। পুরো পার্কটি ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি ক্যামেরার আওয়াতায় রয়েছে । প্রতিদিন দুইবেলায় উন্মুক্ত করা হয় পার্কটি। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ও বিকেল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত। তবে বায়েজিদ সবুজ উদ্যান উন্মুক্ত না থাকায় পার্কে যখন তখন প্রবেশ করা যায় না।
এখানে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছে রনি মজুমদার। তিনি বলেন এখানের পরিবেশ খুব সুন্দর। তাই অফিস থেকে ফিরে সময় পেলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসি। এতে শিশুদেরও মন ভালো থাকে।

জাম্বুরি পার্ক : আড়াই হাজার ফুট প্রাচীরে ঘেরা ৮ হাজার রানিং ফুটের ওয়াকওয়ে নির্মিত এ পার্কটি। মাঝখানে সাড়ে ৩ ফুট গভীরের ৫০ হাজার বর্গফুটের একটি জলাধার। সেই জলাধারের কিনারে বসার জন্য তিনটি দুই ধাপের গ্যালারি। মাঠজুড়ে ছোট ছোট সবুজের ঝোপ। মাঝখানে দুটি ছাউনি। মাঠের প্রান্তে বিশ্রামের জন্য আছে কিছু বেঞ্চ। কিন্তু কিছু দর্শনার্থী জাম্বুরি পার্কে আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করে। পুরো জাম্বুরি পার্কটি ৮ দশমিক ৫৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এর মধ্যে রোপণ করা হয়েছে ৬৫ প্রজাতির ১০ হাজার গাছের চারা। এর মধ্যে আছে সোনালু, নাগেশ্বর, চাঁপা, রাধাচূড়া, বকুল, শিউলি, সাইকাস, টগর, জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আছে পাঁচ শতাধিক দেশি-বিদেশি উদ্ভিদ। নিরাপত্তার জন্য স্থাপন করা হয়েছে ১৪টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা।

এখানে ব্যায়াম করতে আসেন আকলিমা খান, তামান্না, পলি ও কাঞ্চন। তারা বলেন, প্রতিদিন সকাল বিকাল দুইবেলায় ব্যায়াম করতে আসি। এটি আমাদের জন্য খুব ভালো মাধ্যম। তবে যেহেতু এটি উন্মুক্ত স্থান তাই মাঝেমধ্যে ভিতরের লেকের পানিতে ময়লা ফেলে নষ্ট করে ফেলে মানুষ। আবার মাঝেমধ্যে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে বাজে পরিবেশ তৈরি করে।
জাম্বুরি পার্কের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা বলেন, এখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আসে। যেহেতু সব শ্রেণির মানুষ আসে তাই পরিবেশ একটু নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে পরিবেশ নষ্ট করে। তবে এক্ষেত্রে আমরা নিরাপত্তা কর্মীরা সারাক্ষণ খেয়াল রাখি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট