চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অনিশ্চিত ১১ পৌর নির্বাচন

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৪ অক্টোবর, ২০২০ | ১:১২ অপরাহ্ণ

বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালের ১৯ জুন। মামলার কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ঝুলে রয়েছে নির্বাচন। বোয়ালখালী ছাড়াও মেয়াদ শেষ হচ্ছে আরও ১০ পৌরসভার। আগামী ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
নির্বাচন কার্যালয় জানায়, কমিশন থেকে পৌরসভার তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভার তথ্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌরসভার তথ্য পাঠানো হয়েছে। অনেক পৌরসভার নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে পৌর নির্বাচন। কারণ নির্বাচনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখেই সিডিউল ঘোষণা করা হবে।’
জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ২১ মে বোয়ালখালী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালের ১৯ জুন পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু ভোটার সংক্রান্ত মামলার কারণে ঝুলে যায় নির্বাচন। মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও এখনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেই।
পৌরসভা আইনের ৮ ধারার (১) এর ৬ ধারায় বলা হয়েছে, পৌরসভা গঠনের পর প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর মেয়াদ থাকবে। এ আইনে আরও বলা হয়েছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নতুন নির্বাচিত পৌরসভা প্রথম সভায় মিলিত না হওয়া পর্যন্ত আগের পরিষদ দায়িত্ব পালন করবেন।
মেয়াদোত্তীর্ণ বোয়ালখালী পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা পোস্টার, ব্যানার সাঁটিয়ে প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। দলীয় মনোনয়নের আশায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। ধর্ণা দিচ্ছেন নেতাদের ধারে ধারে। ইতিমধ্যেই মেয়র পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল করিম বাবুল, পৌরসভা বিএনপির সভাপতি বর্তমান মেয়র আবুল কালাম আবুর ভাই শফিউল আলম, সহ-সভাপতি মনছুর আলম পাপ্পী ও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক জহিরুল আলম (জহুর) দীর্ঘদিন ধরে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। গত সপ্তাহে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ নামে কধুরখীল স্কুলে সভা করেছেন এমপি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। সভায় পৌর নির্বাচনে একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য শপথ করান সম্ভাব্য প্রার্থীদের।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর মিরসরাই, বারৈয়ারহাট, সীতাকু-, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও বাঁশখালী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
পৌরসভার আইন মতে, পরিষদের প্রথম সভা থেকে ৫ বছর গণনা শুরু হয়। সেই হিসাবে মিরসরাই ও বারৈয়ারহাট পৌরসভার বর্তমান পরিষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৭ মার্চ। সীতাকু- পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি। রাউজান পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ মার্চ। রাঙ্গুনীয়া পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩ এপ্রিল। পটিয়া পৌরসভার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। চন্দনাইশ পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি। সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি। বাঁশখালী পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৮ ফেব্রুয়ারি।
পৌরসভায় আইনে রয়েছে, পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নিবাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান পূর্বকোণকে বলেন, ‘ডিসেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে পৌরসভা নির্বাচনে প্রস্তুতি রয়েছে।’
১৫ পৌরসভার মধ্যে হাটহাজারী পৌরসভা গঠিত হয় ২০১২ সালের ৯ আগস্ট। পৌরসভা গঠনের পর এখানে নির্বাচন হয়নি। একই অবস্থা দোহাজারী পৌরসভারও। ২০১৭ সালে গঠিত হলেও এখনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সীমানা নির্ধারণ নিয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন রয়েছে। মামলা চলমান থাকায় নির্বাচন হচ্ছে না বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তারা। দুই পৌরসভায় গঠনের পর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
স্থানীয় সরকার আইনে বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হলে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রয়েছে। কিন্তু পৌরসভার ক্ষেত্রে এমন কোনো বিধান রাখা হয়নি। শুধু নতুন পৌরসভা গঠনের ক্ষেত্রে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের জন্য প্রশাসক নিয়োগের বিধান রয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট