চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পবিত্র আশুরার ফজিলতপূর্ণ রোজা

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন যেসব আমল করবেন

পূর্বকোণ ডেস্ক

২১ জুলাই, ২০২০ | ৭:০৪ অপরাহ্ণ

ইসলামের দৃষ্টিতে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। মহান আল্লাহ এ দিনগুলোর কসম খেয়েছেন। পবিত্র কুরআনে তিনি বলেন, ‘শপথ প্রভাতের। শপথ দশ রাতের।’ (সূরা : ফাজর, আয়াত : ১-২)। এই সূরায় জিলহজের প্রথম ১০ রাতের কথাই বলা হয়েছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৩৫)

আরবি চারটি পবিত্র ও সম্মানিত মাসের মধ্যে জিলহজ অন্যতম। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস ১২টি—আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। এর মধ্যে চার মাস সম্মানিত।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৩৬)। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদিস শরিফে জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব এই মাসগুলোর নাম এসেছে।

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জিলহজের প্রথম ১০ দিনের নেক আমলের চেয়ে আল্লাহর কাছে অন্য কোনো দিনের আমল উত্তম নয়। সাহাবারা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও এই ১০ দিনের আমলের চেয়ে উত্তম নয়?

নবী করিম (সা.) বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও এর চেয়ে উত্তম নয়; তবে ওই ব্যক্তি ছাড়া, যে তার সর্বস্ব নিয়ে জিহাদে অংশগ্রহণ করল এবং কিছুই নিয়ে ফিরে এলো না। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৩৮, বুখারি, হাদিস : ৯৬৯)

জিলহজের প্রথম ১০ দিনের আমল

সিয়াম : জিলহজের প্রথম ১০ দিন রোজা রাখা অন্যতম একটি নেক কাজ। তাই এ দিনগুলোতে নফল রোজা রাখা খুবই পুণ্যময় কাজ। হুনাইদা বিন খালেদ তাঁর স্ত্রী থেকে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জনৈক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) জিলহজ মাসের ৯ তারিখ, আশুরার দিন ও প্রত্যেক মাসের তিন দিন রোজা পালন করতেন। (আহমদ, আবু দাউদ ও নাসায়ী)

আরাফার দিন রোজা : আরাফার দিন রোজা রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, আরাফার দিনের রোজা আগের ও পরের এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে। (মুসলিম)। তবে আরাফায় অবস্থানকারী হাজিদের জন্য রোজা রাখা মুস্তাহাব নয়। কেননা রোজাবিহীন অবস্থায় মহানবী (সা.) আরাফায় অবস্থান করেছিলেন।

হজ ও ওমরাহ সম্পাদন করা : এ দশকের হজ ও ওমরাহ এ দুটি হলো সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এক ওমরাহ থেকে আরেক ওমরাহ মধ্যবর্তী গুনাহের কাফফারাস্বরূপ আর কবুল হজের প্রতিদান কেবলই জান্নাত। (বুখারী, হাদিস : ১৭৭৩; মুসলিম, হাদিস : ৩৩৫৫)

তাকবির ও তাসবিহ পড়া : এই দিনগুলোতে তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাসবিহ (সুবহানল্লাহ) পড়া সুন্নত। এ দিনগুলোয় জিকির-আজকারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহর কাছে এ ১০ দিনে নেক আমল করার চেয়ে বেশি প্রিয় ও মহান কোনো আমল নেই। তাই তোমরা এ সময়ে তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবির (আল্লাহু আকবার) ও তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) বেশি বেশি করে পাঠ করো। (বায়হাবি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৪৭৪)

জিলহজের চাঁদ উঠার পর করণীয় : জিলহজ মাসের চাঁদ উঠার পর থেকে নিয়ে চুল, মুচ, নখ, বগল ও অন্য স্থানের লোম বা পশম না কাটা মুস্তাহাব। এ সম্পর্কে উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী করিম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জিলহজের চাঁদ দেখে এবং কোরবানির ইচ্ছা করে, সে যতক্ষণ কোরবানি না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত যেন চুল বা নখ না কাটে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৬৫৬)। তবে এ আমল মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়।

তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা : জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজ থেকে নিয়ে ১৩ তারিখের আসরের নামাজ পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়া ওয়াজিব। নারী-পুরুষ সবার জন্য ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা কর্তব্য। (ফাতাওয়ায়ে শামি) এ তাকবির একবার পাঠ করবে। তাকবিরে তাশরিক হলো, ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’

পশু কোরবানি করা : জিলহজ মাসের দশম দিন সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য গবাদি পশু কুরবানি করা ওয়াজিব।

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট