চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা অনাগ্রহের কারণ ও প্রতিকার

সমীর কান্তি নাথ

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১:২৬ পূর্বাহ্ণ

সেই শিশুকাল থেকেই আমরা শিখে এসেছি ‘শিক্ষায় জাতির মেরুদ-’। আমাদের সংবিধানেও শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধির বিকাশ ঘটে। একটি জাতির অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি হলো শিক্ষা। জাতীয় উন্নয়নের ক্রমবর্ধমান পথে অগ্রসর হতে গেলে এবং শীর্ষে পৌঁছাতে হলে শিক্ষা ছাড়া গত্যন্তর নেই। আর কোন একটি দেশের সার্বিক উন্নতি অনেকাংশে নির্ভর করে সে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান শিক্ষায় কতটুকু গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে তার উপর। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় তারা দীর্ঘ সময় ধরে বিজ্ঞান শিক্ষায় গুরুত্ব আরোপ করে আসছে। তাইতো তারা আজ মানব উন্নয়ন সূচকের সকল পরামিতিতেই অনেক বেশি উন্নত। ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এটা আরো বেশি সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। এশিয়া মহাদেশের অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে বিবেচিত জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর নিজেদের সম্মানজনক আসনে আসীন করার পেছনেও রয়েছে বিজ্ঞান শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত জাতি গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজন যুগোপযোগী শিক্ষানীতি। স্বাধীনতার পরপরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে একটি শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ড. কুদরাত এ খুদার নেতৃত্বে দেশের প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। উক্ত কমিশন ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গণমুখী আধুনিক এবং বিজ্ঞানভিত্তিক একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করার মধ্য দিয়ে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। ফলে ড. কুদরাত এ খুদা প্রণীত শিক্ষানীতি আর বাস্তবায়িত হয়নি।
বর্তমান যুগ হচ্ছে বিজ্ঞান, বিশ^ায়ন ও ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগ। বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষানীতিক প্রণয়ন করা হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ পেয়েছি। এই শিক্ষানীতির উদ্দেশ্য হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসম্পন্ন জ্ঞানলাভ করে বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলা। আমাদের শিক্ষানীতিতে শিক্ষার যে উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে তার প্রথম কথাই হচ্ছে ‘ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে নৈতিক, মানবিক, সাংস্কৃতিক, বিজ্ঞানভিত্তিক ও সামাজি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠাকল্পে শিক্ষার্থীদের মননে, কর্মে ও ব্যবহারিক জীবনে উদ্দীপনা সৃষ্টি করা।’ জ্ঞানভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি আইসিটি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি আইসিটি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় যেমন, বিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি শিক্ষাকে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করাও এই শিক্ষানীতির অন্যতম উদ্দেশ্য। কিন্তু শিক্ষা বিষয়ক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশন ইনফরমেশন এন্ড স্ট্যাটিসটিকসের (ব্যানবেইস) পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে এর বিপরীত চিত্রই ফুটে ওঠে।
পরিসংখ্যান বলছে, বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিনদিন হতাশাজনকভাবে কমছে। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ১৭ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪০ শিক্ষার্থীই মানবিক শাখার, যা মোট শিক্ষার্থীর ৪৫ শতাংশের বেশি। আর বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী ছিল ৩১ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থী ২২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
সাধারণত, মাধ্যমিক পর্যায়ে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর এদেশের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা নামের বিশেষায়িত তিন বিভাগে অধ্যয়নের সুযোগ পায়। গ্রামের স্কুলে সাধারণত জেএসসি পরীক্ষায় যাদের ফলাফল তুলনামূলক ভাল, তারাই বিজ্ঞান বিভাগ বেছে নেয়। কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছেলেমেয়েরা তাদের নিজস্ব ইচ্ছাতেই বিভাগ পছন্দ করে। তাদের পছন্দ অনুযায়ী তারা নির্দিষ্ট বিভাগে ভর্তি হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বিভাগ নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক কিংবা শিক্ষকদের ভূমিকা থাকে। তবে বিভাগ নির্বাচনে শহরের স্কুলগুলোতে কে কোন বিভাগ পড়বে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্ধারণ করে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
কাজেই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার পেছনে কারণ কী? বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের যুগে যখন বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আগ্রহ থাকার কথা, বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের সংখ্যা থাকার কথা সবচেয়ে বেশি, তখন বাস্তব অবস্থা ঠিক তার উল্টো কেন? বিজ্ঞান শিক্ষার এই বেহাল অবস্থার সুলুক সন্ধানের জন্য সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে কোন প্রকার গবেষণা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে দীর্ঘ শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু ধারণা পাওয়া যায়।
অভিজ্ঞতার আলোকে যদি বিশ্লেষণ করি তাহলে একটু উপর থেকে দেখার চেষ্টা করতে হবে। বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বিগত কয়েক বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাই মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানের বদলে অধিক হারে ব্যবসায় শিক্ষায় ভর্তি হচ্ছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় পছন্দের তালিকায় আছে মানবিক বা সামাজিক অনুষদের কোন বিষয়।

একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানভিত্তিক যুগে এসে কর্পোরেট জগতে মোহনীয় চাকরির অথবা পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি আমলা হওয়া বা বিদেশি এনজিও এর বড় চাকুরে হওয়ার উচ্চ আশা ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক বা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন শাখায় টেনে আনছে সম্ভাব্য বিজ্ঞান শিক্ষার্থীরা।
কোন সমাজের পেশাগত পর্যায়ের উপরি কাঠামোই প্রেষণা যোগায় ভিত্তি কাঠামোকে। তাই বর্তমান সময়ে মাধ্যমিক পর্যায় থেকেই সামাজিকভাবে অগ্রসর পরিবারের ছেলে মেয়েরা ক্যারিয়ার প্রসপেক্ট বিবেচনা করেই নির্ধারণ করে কোন শাখায় পড়া-লেখা করলে অল্প আয়েসে অধিকতর সফল হওয়া যায়। তাহলে কী বলব কেবল ক্যারিয়ার প্রসপেক্ট বিবেচনা করেই বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমছে। উত্তর হচ্ছে- না। এর সাথে নানাবিধ কারণ যুক্ত। কাজেই এর জন্য শিক্ষা স্তরের নিচের তলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বাস্তব চিত্র ঘেঁটে দেখা জরুরি।
বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা উচ্চতম গণিত, পদার্থ, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান পড়ছে। এই বিষয়গুলো এইচএসসিতেও পড়তে হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- উচ্চতর গণিত, পদার্থ, রাসায়ন এবং জীববিজ্ঞান পড়ানোর জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক আছে কী? দুঃখজনক হলেও সত্য, উত্তর হচ্ছে- প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নেই। অথচ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা ডিগ্রি কলেজগুলোতে এই বিষয়গুলোই পড়ানোর জন্য বিষয়ভিক্তিক অন্তত তিনজন করে মোট ছয়জন শিক্ষক রয়েছেন। অর্থাৎ কথা দাঁড়ালো, ভালো শিক্ষকের অভাবে রয়েছে। একজন ভালো শিক্ষকের গড়ে উঠার পেছনে যে সামাজিক মূল্যায়ন ও প্রেষণা দরকার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য সেটা নেই।
এবার আসি সিলেবাসের বিষয়ে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে ব্যবসায় শিক্ষা বা মানবিক বিষয়ের তুলনায় বিজ্ঞান বিষয়গুলোর সিলেবাস অনেক বড়। আমি বলব আমাদের তরুণ বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের বয়সসামর্থ্য ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একেকজন বিজ্ঞান শিক্ষার্থীকে এমন ্অনেক বিষয় অধ্যয়ন করতে হয় যা সত্যিকার অর্থেই পড়ানোর মতো উপযুক্ত শিক্ষক খুবই কম। অনেকের ধারণা, বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করা অনেক বেশি কষ্টের, অন্য বিভাগের তার অর্ধেক সময় পড়াশুনা করে যেখানে ভালো ফলাফল করা সম্ভব অথচ তার চেয়ে বেশি পড়াশুনা করেও কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া কঠিন। ফলে একজন নবীন শিক্ষার্থী যখন বিজ্ঞানের কোন বিষয় ঠিক মত বুঝতে পারে না, তখন পড়ার মাঝে সে আনন্দের পরিবর্তে বিশাল বোঝা ছাড়া অন্য কোন কিছু খুঁজে পায় না।
তদুপরি বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষে সম্পূর্ণভাবে আয়ত্ত করতে পারে না। ফলে স্কুলের বাইরেও তাদের আলাদাভাবে সেই বিষয়ে প্রাইভেট টিউটর রাখা কিংবা কোচিংয়ে পড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের একজন বিজ্ঞানের ছাত্রের পেছনে শিক্ষা বাবদ বেশি ব্যয় করতে হয়। কিন্তু গ্রাম এলাকায় অনেক পরিবারে সন্তানদের জন্য এই বাড়তি খরচ যোগানো কঠিন। এমতাবস্থায় অভিভাবক পর্যায় থেকেই সন্তানদের বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলা হয়।
এত কিছুর পর যারা বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করতে যায় তাদের অভিজ্ঞতাও সুখকর নয়। আমাদের দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলোতে পাঠদান করা হলেও সেখানে উপযুক্ত বিজ্ঞানাগার নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে বিজ্ঞান শিক্ষা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেÑ আবার বিজ্ঞান অধ্যয়ন আনন্দের না হয়ে শুষ্ক খড়খড়ে বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এর তথ্য থেকে জানা যায় যে, দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ২৯ শতাংশ বিজ্ঞানাগার নেই। যেসব বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানাগার আছে সেগুলোতে কি ধরনের যন্ত্রপাতি আছে, থাকলেও কতটা ব্যবহার করা হয় তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। আবার এমনও দেখা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানাগার আছে, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতিও আছে কিন্তু কেউ ব্যবহার করছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করতে করতে একেবারে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। আবার এমনও অনেক বিদ্যালয় আছে যেগুলোতে যন্ত্রপাতি আছে কিন্তু অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী দূরের কথা ঐসব যন্ত্রপাতির নামও জানে না। এসব কারণে বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
কিন্তু এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? উপায় হচ্ছে সমস্যার পেছনে দায়ী কারণ সমূহ দূরীকরণের যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আজ আমরা বৈশি^ক গ্রামের বাসিন্দা। বিজ্ঞান শিক্ষাকে পাশ কাটিয়ে এই গ্রামের যোগ্য নাগরিক হিসেবে আমরা মোটেই সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারবো না। তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর আগামী প্রজন্মকে যদি এই প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলা না যায় তাহলে আমরা তথ্য প্রযুক্তির উৎপাদনের কায়িক শ্রমের যোগান দাতা হয়েই থাকবো। বিশাল জনগোষ্ঠীর এই দেশে তরুণ উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেক। এদেরকে যদি বিজ্ঞানমনষ্ক হিসেবে গড়ে তোলা যায় তবেই আমরা এই প্রযুক্তি নির্ভর বিশে^র চালিকা শক্তি নিজেদেরকে তুলে ধরতে পারব। এইজন্য আমাদের বিজ্ঞান শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন সাধন করতে হবে।
অতএব বিজ্ঞান শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন সাধনের জন্য শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সিলেবাস, পাঠদান পদ্ধতি, মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। বিজ্ঞান শিক্ষা যেন বোঝা না হয়ে প্রকৃতির না রহস্যকে নতুনভাবে জানার অবলম্বনের হাতিয়ার হিসেবে, আনন্দ প্রাপ্তির উৎস হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে পরিগণিত হয়। এর লক্ষ্যে বিজ্ঞান শিক্ষকদেরও যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি করে নিতে হবে। তাঁদের আর্থিক নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। পেশাগত ক্ষেত্রে ডাক্তার, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে যেন তাঁদের দেখে নবী শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়। তবেই আমাদের বর্তমান শিক্ষানীতির উদ্দেশ্য সফল হবে। অর্থাৎ শ্ক্ষিা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ, একই সঙ্গে নৈতিক মূল্যবোধ, জনগণের প্রতি শ্রদ্ধশীল ও দায়বদ্ধ এবং দেশপ্রেমে উদ্ব্দ্ধু নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
তথ্য সূত্র:
জাতীয় শিক্ষানীতি- ২০১০
বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশন ইনফরমেশন এন্ড স্ট্যাটিসটিকসের (ব্যানবেইস) বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৮
বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক প্রতিবেদন।

লেখক * প্রভাষক, উদ্ভিদবিজ্ঞান চট্টগ্রাম কলেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট